করোনা নিয়ে আতঙ্কে আছি, কিন্তু টিউশনিটাও খুব প্রয়োজন
সহপাঠীরা সবাই যখন করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন ঠিক তখনও ছুটি পাচ্ছেন না গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) একদল শিক্ষার্থী। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সকাল-বিকাল গণ পরিবহনে চেপে টিউশন করাতে ছুটছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী হল বন্ধ থাকলেও সেখানে অবস্থান করতে হচ্ছে তাদের।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে ১৮ মার্চ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরণের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হলেও এখনো হলগুলোতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বাড়ি না যাওয়ার প্রধান কারণ টিউশনি। এসকল শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, ‘জীবন বাঁচানোর জন্য গৃহবন্দী থাকাটা যতটা প্রয়োজন, পড়ালেখার খরচ চালিয়ে নিতে টিউশনিটাও তাদের জন্য ঠিক ততটাই প্রয়োজন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শাহাদাত বলেন, ‘দেশজুড়ে যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে চলছে তখন আমিও চাইনা রুম থেকে বের হয়ে গণপরিবহনে চলাচল করতে। কিন্তু টিউশনির কারণে প্রতিদিনই বাইরে বের হতে হচ্ছে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিভাবকরা এখনো করোনা সম্পর্কে সচেতন নয় এবং অভিভাবকদের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গেলে আমার টিউশনিটা হারাতে হতে পারে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় নিজের পড়ালেখার খরচ নিজেরই চালাতে হয়। এই মুহূর্তে করোনাভাইরাস নিয়ে যেমন খুব আতঙ্কে আছি তেমনি পড়ালেখা চালিয়ে নিতে টিউশনিটাও আমার খুবই প্রয়োজন। আর গোপালগঞ্জের মত ছোট শহরে টিউশনি পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। তাই চাইলেও টিউশনি বাদ দিয়ে বাড়ি যাওয়ার উপায় নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অভিভাবকদের উচিত এই সময়টাতে টিউটরদের ছুটি প্রদান করা আর যারা টিউশনি করাচ্ছে তাদেরও উচিত অভিভাবকদের বোঝানো যে ভাইরাসটি টিউটরের মাধ্যমে তার সন্তানকেও আক্রমণ করতে পারে।’