ভাষাশহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় হাবিপ্রবিতে দোয়া মাহফিল
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২০ পালিত হয়েছে। এদিন বিভিন্ন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দিবসটি পালনে বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল সাড়ে ৮ টায় কালো ব্যাজ ধারণ করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেমের নেতৃত্বে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরী বের হয়।
প্রভাত ফেরীটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। প্রভাত ফেরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেয়। প্রভাত ফেরী শেষে শহীদদের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু.আবুল কাসেম।
এরপর ক্রমান্বয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ট্রেজারার, গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ, প্রগতিশীল শিক্ষক ফোরাম, ডীনবৃন্দ, অনুষদীয় এসোসিয়েশনসমুহ, প্রগতিশীল কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারীক্লাব,হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগ, সাংবাদিক সমিতিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে উপাচার্যের বাণী পাঠ ও বিতরণ করা হয়।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের জাতীয় চেতনা ও ঐতিহ্য বিকাশে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য অপরিসীম। একুশে ফেব্রুয়ারি একদিকে যেমন শোক ও বেদনার, অন্যদিকে তেমনি শক্তি ও প্রেরণার। ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি মায়ের ভাষা ‘বাংলা’ ও স্বতন্ত্র সংস্কৃতি।
তিনি বলেন, ২১’র আন্দোলনের পথ বেয়েই এগিয়ে গেছে আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন। এর চূড়ান্ত ফসল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এর আগে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হাবিপ্রবি শাখা কর্তৃক আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মু. আবুল কাসেম। পরে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে বাদ জোহর ভাষা শহীদদের উদ্দেশে কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পালনের জন্য এ বছর শহীদ মিনারে নতুন ভাবে রং এবং সামিয়ানা দিয়ে ঘিরে প্রবেশ পথ ও বাহিরপথ আলাদা করে দেয়া হয়। এতে পরিচালনার সার্বিক দায়িত্বে ছিলেন জাতীয় উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরান পারভেজ ।