শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে সময় চাইলো বুয়েট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি বাস্তবায়নে দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের তিন দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম তাদের এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, গত ২ নভেম্বর প্রশাসনের সঙ্গে তাদের দাবির বিষয়ে বৈঠক হয়। সেদিন আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, তিনটি দাবি মেনে নিলে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন তারা। আজ ফের উপাচার্যের সঙ্গে তাদের কথা হয়। এসময় ওই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে প্রশাসন আরও দুই সপ্তাহ সময় চায়।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করবেন।
আন্দোলনকারীদের তিনটি দাবি হলো- চার্জশিটের ভিত্তিতে আবরার হত্যার অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কারের পর আহসানুল্লা, তিতুমীর এবং সোহরাওয়ার্দী হলের র্যাগিংয়ের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি বাস্তবায়ন করা, সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি এবং র্যাগিংয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরির শাস্তির নীতিমালা প্রস্তুত করে সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে প্রশাসনের আলোচনা, আলোচনার ভিত্তিতে বুয়েট অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদিত হয়ে প্রস্তাবিত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাবিত নীতিমালা পাঠানোর আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা যা করা প্রয়োজন তার সব কিছু নিশ্চিত করতে হবে।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিষদের পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, ‘আজ দুপুরে উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা তাদের বলেছি দাবিগুলো বাস্তবায়নে তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে। তবে আমরা দুই সপ্তাহের মধ্যে এগুলো পূরণের চেষ্টা করবো। ভিসি স্যার তাদের এই আশ্বাস দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে। রাত ৩টার দিকে হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় একাধিক ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়। আবরারকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মীসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচারসহ কয়েকটি দাবিতে এখন পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।