মাকে খাওয়াতে আবরারের বাড়িতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় খুন হন বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে গত ৫ অক্টোবর ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। পরেরদিন ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা। তবে আবরারের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবার। আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এদিকে ছেলে হত্যার পর থেকেই নীরব-নিথর আবরারের মা। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াসহ কোনোকিছুই যেন তার ঠিক নেই। সম্প্রতি আবরারের মা’র মন ভালো করতেই কুষ্টিয়া গিয়েছে বুয়েটের বন্ধুরা। অংশ নিয়েছেন দুপুরের খাবার ও মসজিদে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে।
বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকের বুয়েটিয়ান পেজে পোস্ট করেছেন তারা। লিখেছেন, ‘অনেকদিন হচ্ছে, সন্তান হারানোর শোকে আমাদের মা ঠিকমত খেতে পারছেন না। আজ কুষ্টিয়ায় আমাদের প্রিয় বন্ধু-ভাই আবরারের গ্রামের বাড়িতে আমাদের প্রিয় দুঃখিনী মাকে নিয়ে একসাথে দুপুরের খাবার খেলাম। জানি, আমরা কেউই আবরারকে ফিরিয়ে দিতে পারবো না, পারবো না প্রিয় মায়ের সন্তান হারানোর দুঃখ ভুলিয়ে দিতে। কিন্তু আমরা সবাই সব সময় আবরার হয়ে থাকতে চাই আমাদের মায়ের সাথে।’
পোস্টের নিচে ডালিয়া আফরোজ নামে একজন লিখেছেন, মহান আল্লাহ তোমাদের মঙ্গল করুন।আর এই দুঃখীনী মাকে শোক সহ্য করার ক্ষমতা দিন।জানিনা কোন দিন উনি আর শান্তি পাবেন কিনা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি জান্নাতে গিয়ে প্রিয় সন্তানের সাথে দেখা হয় যেন উনার।
সোহরাব হোসেন লিখেছেন, পারলে নিয়মিত যোগাযোগ করবেন ভাই। জানি এতে তাঁর সন্তান হারানোর ব্যাথা কমবেনা, কিন্তু একটু হলেও ভালো লাগবে ওনার।
মোঃ শাহরিয়ার সাগরের বক্তব্য, অবশ্যই খুবই প্রশংসনীয়। সবাইকে আল্লাহ সুস্থ রাখুক। আর শহীদ আবরারের মা আমাদের ও মা তাকে ও মহান আল্লাহ পাক সুস্থ রাখুক তার কষ্টগুলোকে আল্লাহ একটু একটু করে কমিয়ে দিক।মহান আল্লাহ রক্ষা করুক এই পরিবার টিকে।দোয়া,সালাম ও ভালোবাসা সবার জন্যে। একজন লিখেছেন, হাজারো আবরারকে উনি পেয়েছেন, আল্লাহ আপনাদের ভাল করবেন। আবরাররা মরেনা, আবরাররা ইতিহাস হয়ে রয়, হয়ে রয় সাক্ষী হয়ে যুগযুগ ধরে।
নার্গিস নাহারের বক্তব্য, ‘নামাজ পড়ার সময় প্রায়শই আবরার মনের মধ্যে এসে যায়, তখন তার জন্য দোয়া করি আল্লার কাছে, চোখ থেকে পানি পরতে থাকে, আমি সেই পানি আটকায় না। আল্লাহ আবরারের মা-বাবাকে ধর্য্য ধরার তৌফিক দিন।’ নাসিমা আখতার লিখেছেন, ‘তোমাদের জন্য অনেক ভালবাসা বাবারা। আবরার না ফেরার দেশে, তারপরও তোমাদের এ আয়োজনে চোখের জলে ভাসলাম। তোমাদের মানবিক আচরণের জন্য শত কোটি আশীর্বাদ আর দোয়া। আবরারের মা, আমার বোনের জন্য রইল দোয়া, আল্লাহ তাঁকে শক্তি দিক।’