আবরারের ছোটোবেলার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল
ছাত্রলীগের হাতে নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের শিশুকালের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত সোমবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘বুয়েটিয়ান’ ফেসবুক পেজে ছবিটি পোস্ট করার পর মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়।
আবরারের শিশুকালের ছবিটিতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ৭৭৮ জনের বেশি ব্যক্তি ছবিটি শেয়ার করেছেন। তারা সবাই বলছেন, আবরারের শিশু বয়সের ছবিটি দেখে কেউ চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না।
মানসুরা মাহিন লিখেছেন, ‘যতবার তোমার খবর পড়েছি, দেখেছি কোনোভাবেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে অনেক দোয়া রইল, আল্লাহ তোমাকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুক, এই কামনাই করি। তোমার মা বাবার কান্নার মূল্য তুমি পাবে ইনশাআল্লাহ...’
শেহজাবিন রহমান রিমঝিম লিখেছেন, ‘তোমাকে কখনও বাস্তবে দেখিনি, ভাই। এরপরেও তোমার কথা ভাবলে কষ্টে বুকটা ফেটে যায়। আল্লাহ তায়াআলা...তোমাকে জান্নাত নসিব করুক।’
সুচনা ইসলাম আলো নামের একজন লিখেছেন, ‘চেহারায় নুর আছে ছোটবেলা থেকেই। আল্লাহ মনে হয় তাদের প্রিয় রুহগুলাকে অনেক আগে থেকেই আলাদাভাবে বিশেষ বৈশিষ্ট্যে স্পেশাল করে দেন।’
সায়েদ বাহার উদ্দিন বলেছেন, ‘এনেছিলে সাথে করে মৃত্যুহীন প্রাণ, মরণে তাহাই তুমি করে গেলে দান।’ তোমারি এ রক্তের বিনিময়ে আজ ও আগামীর বুয়েটের শিক্ষাঙ্গন পুরোপুরি কলুষমুক্ত হোক। জয় হোক সত্য সুন্দরের! নির্মুল হোক সকল দানবীয় অসুরদের।
মিমি নামের একজন লিখেছেন, ‘আপনার কথা মনে হলে কান্না পায়। আল্লাহ যেনো আপনাকে জান্নাত নসিব করেন। আপনার কষ্টের কথা মনে হলে বুক ফেটে যায়। আমরা একই জেলার তবে কেউ কাউকে জানতাম না। তবুও আপনাকে অনেক মিস করি।’
মো. ইউসুফ লিখেছেন, ‘আহ্ আবরার যেন আমার পরিবারের কেউ একজন, তার পবিত্র মুখটা দেখলে চোখের পানি ধরে রাখা যায় না। আল্লাহ তার পরিবার আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব সবাইকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুক। আর আবরারকে শহীদের উঁচু মর্যাদা দান করুক।’
রিক্তা চৌধুরী লিখেছেন, ‘জানোয়ারগুলো তোকে বাঁচতে দিল না ভাই, এত পরিছন্ন ঈমানদার ছিলে তুমি যে, তুমি তোমার কৃতকর্মের জন্যই জান্নাতের দাবিদার। হে মহান আল্লাহ, আপনি আমাদের প্রিয় এই মানুষটাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা করে নেন। হাজার মা, বাবা, ভাই, বোনের চোখের পানি আপনি কবুল করে নেন। আমিন।’
মারিয়াম জান্নাত ইশা বলেছেন, ‘ভাই তুমি আমার রক্তের কেউ না। কোনোদিন দেখিনি। অথচ তোমার মৃত্যু সংবাদে যতবার কেঁদেছি যতটা যন্ত্রণা অনুভব করছি, আমি জানি না আমি কোনো প্রিয়জন হারিয়ে এতটা কেঁদেছি কিনা। যতবার তোমাকে দেখি ততবার চোখ দুটি আপনা আপনি জলে ভরে উঠে। আমার মা যখনই তোমার কথা শুনে তখনি হু হু করে কেঁদে উঠে। বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে। তুমি যে অমর, তুমি বেঁচে থাকবে চিরকাল কোটি মানুষের প্রাণে।
নিশাত পারভীন নামের একজন লিখেছেন, ‘আবরার তুমি মৃত নও, তুমি জীবিত। খুনিরা বুক উঁচিয়ে হাঁটবে এই পৃথিবীজুড়ে, তারপরে কোথায় যাবে? কোথায় ওদের বিচার হবে তুমি জানো। দুনিয়ার বিচারক ওদের ছেড়ে দিলেও, ন্যায্য বিচারক ওদের ছাড়বে না। প্রতিটা মারের হিসাব তোমাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। তুমি জান্নাতবাসী হও। আজ লাখো কোটি মানবতা তোমার জন্য হাত তুলেছে...।’
আরজে মিশু নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘যতটা কষ্ট তুমি পেয়েছিলে, তুমি চলে যাবার পর আমরাও তোমার জন্য ততটাই কষ্ট পাচ্ছি। তুমি তো আমাদের আপন কেউ নও, তারপরেও কেন যেন মনে হয় তুমি আপনের থেকেও বেশি কিছু ছিলে।’
আহমাদুল হক আদনান লিখেছেন, ‘আমিও আবরার হতে চাই...! আবরার, তোমাকে ওরা মেরে বড় ভুল করেছে। জানো, পুরো দেশ এখন তোমার নামে মুখরিত। শিল্পীরা গান করছে তোমাকে নিয়ে, কবিরা লিখছে কবিতা, গল্পকারের কাছে তুমি এখন গল্পের মূল চরিত্র!! আঁকিয়ে-রা তোমার নামে গ্রাফিতি আঁকছে দেয়ালে দেয়ালে..।
রোকসানা কবির লিখেছেন, ‘আমার বাচ্চাদের তোমার কপালের কালো টিপের মতো টিপ দিতাম-যাতে কারো নজর না লাগে। তোমার মাও হয়তো তাই দিয়েছিল। কিন্তু নজর তো লেগেছিল। হায়নাদের নজর। বাবা তোমার কথা ভাবলেই মন, চোখ ভিজে যায়। তারপরেও মনে রাখতে চাই।
এফএ আমাতুল্লাহ লিখেছেন, ‘ছবিটা দেখে বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো ব্যাথায়। চোখের এই অপ্রকাশিত জলকণাগুলো উপরে বিচার দিয়েছে। এপারে বিচার পাই আর না পাই, উপরে ঠিক সে সব শোনে নিয়েছে। হাসবুনাল্লাহি ওয়া নি’মাল ওয়াকিল।’