বুয়েটিয়ান পেইজের পোস্ট নিয়ে নতুন বিতর্ক
শনিবার ‘বুয়েটিয়ান’ নামের ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ছবিসহ ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘বুয়েট এখন যে মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে তা যে একদিনে হয়নি, ডিএসডব্লিউ মিজান স্যার নিজেই আমাদের প্রশ্নোত্তরের সময় বলেছেন। বুয়েটের ওয়েবসাইটের ইউরিপোর্টারে যে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের অভিযোগগুলো এসেছে সেগুলোও শিউরে ওঠার মতো।
জানা যাচ্ছে, বুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির সূত্রপাত হয় ২০১২ সালে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে তখনকার উপাচার্য নজরুল ইসলাম স্যারের পদত্যাগের দাবীতে আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে। উপাচার্যের পদ আকড়ে রাখতে তিনি তখনকার ছাত্রলীগের নেতা কর্মীদের সহায়তা নেন। এরপর থেকেই ছাত্রলীগের ধংসাত্মক কার্যক্রমের বিপরীতে প্রশাসনের তেমন কোন হস্তক্ষেপ দেখা যায় না।
২০১২ সালে শিবির সন্দেহে নজরুল ইসলাম হলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা সাধারণ সম্পাদক, সিভিল ০৭ ব্যাচের তন্ময় আহমেদের নেতৃত্বে নির্মম নির্যাতন করে হল থেকে বিতাড়িত করে। বিতাড়িত শিক্ষার্থীদের জিনিসপত্রে আগুন দিয়ে প্রকাশ্যে উল্লাস করলেও হল প্রশাসন কোনোরকম বাধা দেয়নি।
এ ঘটনায় অভিযোগ ভিত্তিতে হল প্রশাসন যে তদন্ত রিপোর্ট দায়ের করে তার একটি কপি ইনবক্সে আমাদের কাছে এসেছে। খুবই দায়সারা গোছের তদন্ত প্রতিবেদন দেয় হল প্রশাসন এবং জড়িতদের শাস্তির ব্যবস্থা দূরের কথা, শাস্তির কোন সুপারিশও করা হয়নি সে প্রতিবেদনে।
ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি আমিনুল হক পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক তন্ময় আহমেদের হাত ধরেই বুয়েট ছাত্রলীগের ধংসাত্মক ও মারপিটের রাজনীতিতে পথচলা শুরু হয়। সেই থেকে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় একটু একটু করে আজকের এই দানবে পরিণত হয়েছে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।’
এই পোস্টের কমেন্টবক্সে শুরু হয়েছে বিতর্ক। অভিযুক্ত তন্ময় নিজেই একবার শিবিরের হামলার শিকার হয়েছিলেন। অনেকেই অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যেমন ফজলে রাব্বি লিখেছেন, ‘তন্ময় ভাইয়ের উপর যখন হামলা হয়েছিল তখন কই ছিল আপনার মানবিকতা। ছাত্রলীগের ছেলেদের রক্তের মূল্য নেই? জীবনের মূল্য নেই?’
তন্ময়ের ওপর হামলার প্রসঙ্গে তৌসিফ আহমেদ রাইয়ান লিখেছেন, ‘বিচার পায়নি বলে নিজেই বিচার করে দেবে?’
নাজিব আলম লিখেছেন, ‘শিবিরের পক্ষের হলে বিচার চান, আর এর বাইরে কেউ হলে বিচার চান না। এই আপনাদের মানবতা?’
তাসনুভা আলম লিখেছেন, ‘দিপ তন্ময় এইগুলো ছিল সাধারণ ছাত্রদের ত্রাস। ওদের শিবির মারলে সাধারণ ছাত্র যাদের সাথে কুকুর বেড়ালের মতো আচরণ করতো ওরা। তাদের থেকে সাপোর্ট আশা করে কিভাবে! আওয়ামী লীগ পাওয়ার আছে এতদিন, আওয়ামী লীগ বিচার করে না কেন! আবরার এর সাথে দিপ বা তন্ময় এর কোনো তুলনা নাই কারণ আবরার ওদের মতো মানুষ পিটাতো না।’