০৮ অক্টোবর ২০১৯, ১৩:০৯

বুয়েটে পেশিশক্তির রাজনীতি চান না সাবেক ছাত্র আনিসুল হক

  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ৮৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক বলেছেন, ‘এক সময় রাজনীতি করা হতো আদর্শের জন্য। এখন করা হয় চাঁদাবাজি, বড় দলকে পাহারা দেয়ার জন্য।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে তিনি একথা বলেন। প্রতিষ্ঠানটির ওই ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আনিসুল হক বলেন, ‘বুয়েটে সারা দেশের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের তুলে আনা হয়। পৃথিবীর সব জায়গায় বুয়েটের সুনাম রয়েছে। অথচ বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থীকে এমন পরিণতি ভোগ করতে হলো।’

তিনি বলেন, ‘আমার চাই বুয়েটে বিতর্ক ক্লাস, সংস্কৃতি ক্লাব এ ধরনের সংগঠনগুলো থাকুক। পেশিশক্তির রাজনীতি না থাকুক।’ এসময় সাবেক বুয়েটিয়ানদের প্ল্যাকার্ডের লেখা ছিল, ‘আমার সেই গর্বের ক্যাম্পাস ফিরিয়ে দাও’।

উল্লেখ্য, রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করে বুয়েটের ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৯ জনকে।

এছাড়া বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতিসহ কমিটির ১১ জন নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

 

 


মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তারা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

এ সময় তারা বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবি জানান। পাশাপাশি আবরার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।

 

প্রসঙ্গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একতলা থেকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ির মাঝ থেকে আবরারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই রাতেই ২০১১ নম্বর কক্ষে আবরারকে ডেকে নিয়ে পেটান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা।

পুলিশ জানিয়েছে, আবরারের দেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ণ পাওয়া গেছে। তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার লাশে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে সোমবার সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহত আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ। এ ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুয়েট ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে ১১ জনকে।