০৭ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৪০

অবশেষে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পাওয়ার কথা জানালো পুলিশ, আটক ২

আবরারকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যার সময়কার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এর প্রতিবাদে প্রভোস্ট কার্যালয় ঘেরাও করে রাখেন তারা।

তবে ওই সময়কার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, ‘আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছি। আমরা দেখছি কারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। এটি যে হত্যাকাণ্ড, এতে সন্দেহ নেই।’

তিনি বলেন, ‘কয়েকটি সিটি সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে। ইতিমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিচার বিশ্লেষণ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজনৈতিক পরিচয় যাই থাকুক, যে জড়িত থাকবে তাকেই তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’

আবরারকে হত্যার ঘটনায় দু‘জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল এবং সহ সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ।

এর আগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে, রাত ২টা ৬ মিনিটের পর আর কোন ফুটেজ পাওয়া যাচ্ছে না। ওই ফুটেজ পেলে হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া একাধিক শিক্ষার্থী মোবাইলে ভিডিও করার কথা শোনা গেলেও তা এখনো পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে মিহি নামে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা সিসিটিভি ফুটেজের জন্য প্রভোস্টের রুম অবরুদ্ধ করে রেখেছি। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হবে আমরা এই জায়গা ছাড়বো না।’

ওদিকে বুয়েট ছাত্র হত্যার ঘটনায় এক ছাত্রকে আটকের খবর পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদেরেকে যেতে না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে আটক ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


ফাহাদকে হত্যার বিচার দাবিতে দেশব্যাপী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। যার অংশ হিসেবে আজ সোমবার দুপুর ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বুয়েট অভিমূখে বিক্ষোভ করবে শিক্ষার্থীরা।

ওই হলের সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের মাধ্যমে খুনীদের চিহ্নিত করার দাবিও জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় দেশের সকল ক্যাম্পাসে এক যোগে আন্দোলন শুরুর ঘোষণা দেবে তারা।

ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘বুয়েটে ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ‘ নামে প্রতিবাদী একটি ইভেন্টও খুলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

উল্লেখ্য, রোববার রাত তিনটার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের দ্বিতীয়তলা থেকে আবরার ফাহাদ (২১) নামে এক ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। নিহত আবরার ফাহাদ ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।


জানা যায়, রবিবার রাত আটটার দিকে একদল ছাত্র আবরারকে তার রুম থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত দুইটার দিকে শেরে বাংলা হলের প্রথমতলা ও দ্বিতীয়তলার মাঝামাঝি জায়গায় ফাহাদের মরদেহ দেখতে পায় অন্য শিক্ষার্থীরা। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষার্থীদের ধারণা ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব হোসেন ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।