২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১১:৪৪

গিটার বাজানোয় ভিসির শোকজ, বকেছেন মাকেও

পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা দ্বিতীয়টা আছে কিনা সন্দেহ। ভার্সিটির ভেতর বসে বন্ধুদের নিয়ে গিটারে গান করার অপরাধে এক ছাত্রকে বহিষ্কারের হুমকি এবং পরবর্তীতে শো-কজ (কেনো এটা অপরাধের আওতাধীন হবে না)। সেই ভাগ্যবান ছাত্রটা আমি ছিলাম।

শো-কজ’র উত্তরটাটা এমন ছিলো যে, গিটার বাজানো আমার অপরাধ ছিলো। আর কোনোদিন এভাবে গিটার বাজাব না। আমাকে যেন ক্ষমা করে দেয়া হয়। এর পরদিন থেকে পর পর চারদিন তার পায়ের পিছনে ছুটছি। সার্টিফিকেট হারাবার ভয়ে ছেঁছরামি করছি। আমার শখ, গিটার প্লে করা। এরপর অনেকদিন গিটারে হাত দেয়া হয়নি।

আজও মনে পড়ে, সেদিন সন্ধ্যায় ভিসি স্যারের সাথে প্রতিটা কথার উত্তরে আমার পা কাঁপছিল। আমার মাকে ফোন দিয়ে বলা হয়েছিলো, আপনার ছেলেকে ভার্সিটিতে কেনো পাঠিয়েছেন? আপনি কেনো গিটার কিনে দিছেন? সেদিন মনে হয়েছিলো জন্মের পর আজন্ম পাপ ছিলো সেটা।

আর আজকের এই পোষ্ট করতে আমার কলিজাটাকে আকাশ সমান বড় করতে হয়েছে। আমি হয়তো জানি, আপনি আবারো ক্ষমতায় থাকলে আমি সার্টিফিকেট নাও পেতে পারি। মনের দুঃখ কই রাখি বলেন? আরেকটু সাহস পেলে আপনাকে জিজ্ঞেস করতাম, আপনার বংশে এমন কেউ কি আছে যে নিজে নিজে গিটার বাজানো শিখেছে? মনের প্রশান্তি আপনি কি বুঝবেন? আপনি ছাত্রদের চাওয়া পাওয়া আপনি কি বুঝবেন? ৫৫ একরের বাইরে আসেন। মানুষের সাথে মিশলে হয়তো মানুষের অভাবটা বুঝতে পারতেন। এই শিক্ষা দিয়ে কি হবে? কি হবে এই ভিসিত্ব দিয়ে? শিক্ষার্থী কতটা কষ্ট পেলে আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয়, সেটার আপনি কি বুঝবেন?

যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষন আঁশ। ক্ষমতা ক’দিনের? আজকে মরলে কাল আপনার নিজের সন্তানই যাবে না আপনার কবর দেখতে। আর আমরা তো দূরে থাক। ভাবতেই অবাক লাগছে, আমি একজন ভিসির বিরুদ্ধে কথা বলছি। যাই হোক, অন্তত উপাধিটার মূল্য রাখবেন।

বিষয়টা নিয়ে আমার অনেক প্রিয় শিক্ষকই হেসেছিল। কিন্তু চুপ ছিলো অস্ত্বিত্বের জন্য।

বিঃদ্রঃ সেদিন সন্ধায় একটা ছেলেও সেখানে বসে বাঁশি বাজানো শিখছিলো। তাকেও তো ছাড় দেননি। এই ভিসির পদত্যাগ চাই। (মোহাম্মাদ রিফাতের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)