বশেমুরবিপ্রবির আন্দোলনে ভিসিপন্থীদের হামলা
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, হামলাকারীরা উপাচার্যের অনুসারী ও তার আশ্রয়পুষ্ট একদল শিক্ষার্থী।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে হামলা চালানো হয়। তবে শিক্ষার্থীরা সতর্ক থাকায় হতাহতের তেমন ঘটনা ঘটেনি। এসময় হামলার নেতৃত্ব দেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আরিফুল ইসলাম সাকিব।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় বিক্ষোভ শুরু হলে ভিসিপন্থী একদল ছাত্র বেলা তিনটায় তাদের উপর দুই দফায় হামলা করে। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কৌশলে হামলা প্রতিহত করে।
এছাড়া ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
হামলার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম সাকিবের যোগাযোগ করতে তার মোবাইলে কল দেয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভুঁইয়ার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তা বন্ধ দেখায়।
সম্প্রতি ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ কী’ এই বাক্যটি ফেসবুকে পোস্ট করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে অবৈধ, অমানবিক, স্বাধীন মতপ্রকাশের প্রতিবন্ধক ও সাংবাদিকতার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য খন্দকার নাছির উদ্দীনের বিভিন্ন অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতার জন্য তার পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন পক্ষ।
এর আগেও শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার দায়ে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার রাতে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। তাদের বিক্ষোভের এক পর্যায়ে গভীর রাতে একটি অফিস আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার নুরুদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ১৪টি বিষয়ের নিশ্চয়তা দেয়া হয়।
এর মধ্যে অন্যতম হলো- সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাক স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ ছাড়া বহিষ্কার করা হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে অপমান করা যাবে না। ফেসবুক স্ট্যাটাস ও কমেন্টকে কেন্দ্র করে কোনো শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হবে না।
কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সেই আশ্বাসকে প্রত্যাখান করে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ফের বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এমনকি তাদের বিক্ষোভের মুখে নিয়োগ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত করেছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার নুরুদ্দিন আহমেদ বলেন, অনিবার্য কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।