২৮ মে ২০১৯, ১৬:৩০

মানবতার কাছে সেই আক্কাস আলীর আবেদন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আক্কাস আলী মানবতার নিকট একটি আবেদনপত্র লিখেছেন। সম্প্রতি দুই ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ওই শিক্ষককে অব্যহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়।

মানবতা বরাবর লেখা আক্কাছ আলীর আবেদনপত্রের বিষয় ছিলো— ‘মানুষকে ভুল বোঝা থেকে বিরত থাকার জন্য আবেদন।’ রবিবার রাতে আক্কাছ আলী তার ফেসবুক আইডিতে দুই পৃষ্ঠাবিশিষ্ট এই আবেদনপত্রের ছবি প্রকাশ করেন।

আবেদনপত্রে আক্কাছ আলী তার গোপালগঞ্জের নীলামাঠে বাড়ি তৈরিতে খরচকৃত টাকার উৎস সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেছেন। আবেদনপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন তার পাঁচতলা ভিত্তিবিশিষ্ট তিনতলা বাড়িটি নির্মানে প্রায় এক কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ লক্ষ টাকা তিনি পেয়েছেন তার বোনের স্বামীর মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হিসেবে। আবেদনপত্রে আক্কাছ আলীর প্রদানকৃত তথ্যানুযায়ী তার বোনের প্রথম স্বামী ২০০৮ সালে সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন এবং ঐ দুর্ঘটনায় একটি মামলাও হয়। পরবর্তীতে তার বোন জমির শেখের ছোটো ভাই ছমির শেখের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ছমির শেখ ২০১৬ সাল পর্যন্ত উক্ত সড়ক দূর্ঘটনার মামলাটি লড়েন। ২০১৬ সালে মামলার রায় প্রদান করা হয় এবং রায়ে জমির শেখের পরিবারকে ৬২ লক্ষ ১৪ হাজার ৯ শত ৯০ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ছমির শেখ উক্ত টাকা সংগ্রহ করে তার সম্পূর্ণ অংশই আক্কাছ আলীকে প্রেরণ করেন। আক্কাস আলী এই টাকার ১০ লক্ষ জমি ক্রয়ে এবং ৪০ লক্ষ বিল্ডিং তৈরিতে ব্যয় করেন৷ বিল্ডিং তৈরিতে ব্যয়কৃত অবশিষ্ট টাকার ৪০ লক্ষ তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোন নিয়েছেন, পাঁচ লক্ষ টাকা তার নিজের বেতন ভাতা থেকে খরচ করেছেন এবং অবশিষ্ট ১৫ লক্ষ টকা তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও দোকান থেকে ধার নিয়েছেন। আবেদনপত্রের শেষে তিনি লিখেছেন ‘সকল প্রমাণপত্র দাখিল করা হলো, অতএব জনাবের নিকট মানবতার দিক থেকে বিবেচনা করার জন্য আবেদন করা হলো’।

উল্লেখ্য, বশেমুরবিপ্রবির সিএসই বিভাগের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়ারানী করার অভিযোগে গত ১৯ এপ্রিল আক্কাছ আলীকে চার বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আক্কাছ আলীর যৌন হয়রানির বিষয়টি প্রকাশের পর তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং আয়ের উৎস সম্পর্কেও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষার্থীরা।