১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:৫৭

পাবিপ্রবিতে পরীক্ষায় নকলে ধরা পড়েও কৃতকার্য দুই ছাত্রী, পরে ফল স্থগিত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগে নকলসহ ধরা পড়া দুই ছাত্রীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থাকলেও, সম্প্রতি প্রকাশিত ফলাফলে তাদের কৃতকার্য দেখানো হয়েছে। ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচনার ঝড় উঠলে কর্তৃপক্ষ পরে ফলাফল স্থগিত করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা গত এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়। ওই পরীক্ষায় জিই-২২০৯ কোর্সে জয়ন্ত রাণী বিশ্বাস ও মুসফিকা বিনতে হাকিম নামের দুই ছাত্রী নকল করতে গিয়ে ধরা পড়েন। পরে ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের (ডিবি বোর্ড) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের পুরো সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের সঙ্গে ক্লাস করার নির্দশনা দেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দুই ছাত্রী ২০২২-২৩ শিক্ষার্ষের সঙ্গে ক্লাস করাও শুরু করেন।

কিন্তু গত বুধবারে (৮ অক্টোবর) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা যায়, ওই দুই ছাত্রী নকলে ধরা পড়া কোর্সসহ সব কটি কোর্সে কৃতকার্য হয়েছেন। জিই-২২০৯ কোর্সে জয়ন্ত রাণী বিশ্বাস ‘বি+’ ও মুসফিকা বিনতে হাকিম ‘এ’ পেয়েছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী যদি কোনো কোর্সে নকলসহ ধরা পড়েন, তাহলে ওই কোর্সের খাতা, নকলের প্রমাণাদিসহ সব কিছু ওই দিনই বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে দিয়ে আসবেন এবং ওই খাতা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরেই সংরক্ষিত থাকবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই দুই ছাত্রীর দুটি খাতা ওই দিনই বিভাগ থেকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে পাঠানো হয়েছে এবং ওই দুটি খাতা এখনো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরেই সংরক্ষিত আছে।

প্রশ্ন উঠেছে, ওই খাতা যদি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরেই থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষক কীভাবে ওই দুই ছাত্রীর খাতা দেখেছেন এবং কীভাবে তারা পাস করেছেন। 

এ বিষয়ে জানার জন্য সংশ্লিষ্ট কোর্সের শিক্ষক খন্দকার আরিফুজ্জামানকে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে ওই ছাত্রীকে অকৃতকার্য দেখিয়েই ফলাফল পাঠিয়েছি। এরপর কী হয়েছে, সেটা আমি বলতে পারব না। শেষে রেজাল্টের যে ভেরিফিকেশন হয়, সে সময় আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভ্রমণে থাকার কারণে সেটা দেখতে পারিনি।’

তবে এটিকে বিভাগের শিক্ষকদের ভুল বলে স্বীকার করেছেন পরীক্ষা কমিটি এবং বিভাগটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব শিক্ষকরা ফলাফল তৈরির দায়িত্বে ছিলাম তাদেরই ভুল হয়েছে। আমাদের ব্যস্ততার কারণে এই ভুলটি হয়ে গেছে। তবে এই ভুলটি আমাদের চোখে পড়ার পর আমরা ফলাফলটি স্থগিত করেছি। আমরা এই দুই ছাত্রীকে অকৃতকার্য দেখিয়ে নতুন ফলাফল প্রকাশ করব।’