পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস ও শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে জাবিপ্রবিতে মানববন্ধন, গণস্বাক্ষর
প্রতিষ্ঠার আট বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস ও পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ হয়নি জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি)। তীব্র শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত ঘাটতি এবং গবেষণায় স্থবিরতার অভিযোগ তুলে পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস নির্মাণ, প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুমোদন ও জরুরি ভিত্তিতে অধ্যাপক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী এ কর্মসূচিতে অংশ নেন। তারা অবিলম্বে দাবি পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে চারটি মূল দাবি তুলে ধরেন দ্রুত পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস নির্মাণ, প্রকল্পের ডিপিপি অনুমোদন, দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা, একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, প্রতিষ্ঠার আট বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন অধ্যাপক নিয়োগ হয়নি। ফলে একাডেমিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং মাস্টার্স পর্যায়ে থিসিস সুপারভিশনের মতো কাজ জুনিয়র শিক্ষকদের মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে।
ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী নিরব হাসান বলেন, ‘আমাদের বিভাগে চেয়ারম্যানসহ সব শিক্ষকই প্রভাষক। তারা চেষ্টা করছেন, কিন্তু অধ্যাপক না থাকায় গবেষণা ও মানসম্মত শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রক্টরসহ প্রায় সব প্রশাসনিক পদই ভারপ্রাপ্তের ওপর চলছে।’
অন্য শিক্ষার্থী তাসনীম নুশরা বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পর প্রতিষ্ঠিত অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস পেয়েছে। অথচ আমরা এখনো চার-পাঁচটি ক্লাসরুমে সীমাবদ্ধ। আধুনিক ল্যাবের অভাবে প্র্যাকটিক্যাল ও গবেষণাভিত্তিক শিক্ষা সম্ভব হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: এক নজরে দেখুন ডাকসু নির্বাচনের সব প্যানেল ও প্রার্থীর নাম
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত আট মাস আগে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। সিনিয়রিটি ও প্রমোশনকে কেন্দ্র করে একাংশ শিক্ষক অধ্যাপক নিয়োগে আপত্তি তুলেছেন বলে দাবি করেন তারা।
মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ডিপিপি ইতোমধ্যেই সবুজ পাতায় চলে গেছে। মাস্টারপ্ল্যান সম্পন্ন হলেই অনুমোদন নেওয়া হবে এবং অনুমোদনের পরপরই বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠাকালে জাবিপ্রবির ক্যাম্পাস ৫৩০ একর জমিতে নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৩১ একরের ওপর কার্যক্রম চালানোর কথা জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, এতে তারা গভীরভাবে হতাশ।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।