বরখাস্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা বললেন—‘সে চাকরির মুখে লাথি মারি’
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নানা অনিয়ম ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দুই শিক্ষক ও দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও এক কর্মকর্তাকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আট শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০৮ তম সভায় এ সিদ্ধান্তসমূহ নেওয়া হয়।
এদিকে চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্ত হওয়া হেলালুল ইসলাম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। ১৫ আগস্টে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কারণে যদি চাকরি না থাকে, সে চাকরির মুখে লাথি মারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ফুটপাতে চা বিক্রি করে খাবো তবু ও চেতনার সাথে নো কম্প্রোমাইজ। দেখা হবে বিজয়ে, কথা হবে শ্লোগানে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয়তু শেখ হাসিনা।’
আরও পড়ুন: যবিপ্রবিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা: ৫ শিক্ষক-কর্মকর্তা বরখাস্ত, ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
প্রসঙ্গত, রিজেন্ট বোর্ডের সকল সদস্যদের সিদ্ধান্তের আলোকে ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফিরোজ কবিরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বৈরাচারের হাতকে শক্তিশালী করে এমন বক্তব্য প্রদান এবং জুলাইয়ে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদেরকে জুমার নামাজ পড়তে বাধা, শিক্ষকসুলভ আচরণের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে অনুমতিবিহীন বিদেশে পোস্টডক করতে যাওয়ায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. অছিকুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও দুদকের চার্জশিটভুক্ত মামলার আসামি পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও পূর্ত (পিএনডি) দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. আব্দুর রউফ ও পূর্বে স্থগিতকৃত বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার মো. শফিউল আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ড। একইসঙ্গে তদন্ত বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী ও বিশ্ববিদ্যালয় আইন ৫ এর ছ, ঞ অনুযায়ী যশোর জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও যবিপ্রবির কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হেলালুল ইসলামকে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে ২০২২ সালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দৈনিক আমাদের সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক শিহাব উদ্দিনকে মারধরের ঘটনায় চার ছাত্রলীগ কর্মীকে হল থেকে বহিষ্কার ও ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সায়েদ, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের নাসিম বাহার, একই বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের নূর আলম এবং একই বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের সৌমিক। তৎকালীন সময়ে তারা সবাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যবিপ্রবি শাখার সাবেক সভাপতি সোহেল রানার অনুসারী ছিলেন।