০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৪৩

চাঁবিপ্রবিতে ‘ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ ও বাংলাদেশের বিকাশধারা ’৪৭, ৭১, ৯০ ও ২৪’ সেমিনার অনুষ্ঠিত

‘ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ ও বাংলাদেশের বিকাশধারা সেমিনার  © সংগৃহীত

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চাঁবিপ্রবি)  ‘ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ ও বাংলাদেশের বিকাশধারা: ১৯৪৭, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। 

 সেমিনার জাতীয় ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য চারটি বাঁকবদলের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিশ্লেষণ তুলে ধরেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহম্মেদ। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন। 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহম্মেদ বলেন, ‘ইসলাম ন্যায় ও সত্যের পথে চলার শিক্ষা দেয়। ১৯৪৭, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪—প্রত্যেক সন্ধিক্ষণেই আমরা প্রমাণ করেছি, আল্লাহ ন্যায়ের পক্ষে থাকা জাতিরই সহায় থাকে।’

তিনি বলেন, ‘যুবকরাই দেশের প্রাণশক্তি। জাতি যখন সংকটে পড়ে, তখন তারাই এগিয়ে আসে হাল ধরতে। দেশের প্রতিটি সন্ধিক্ষণে তারুণ্যের বলিষ্ঠ ভূমিকা আমাদের আশার আলো দেখিয়েছে। তাই সময় এসেছে, অন্যায়-অবিচারকে রুখে দিয়ে ন্যায়, সততা ও আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার। দেশ গড়ার নেতৃত্ব আজকের যুবসমাজের হাতেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতিহাস কেবল অতীতের দলিল নয়, বরং জাতির ভবিষ্যৎ রচনার পথনির্দেশক। তরুণ প্রজন্মকে দেশের ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণগুলোর সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে—তা না হলে জাতির আত্মপরিচয় ঝুঁকিতে পড়বে। এই আয়োজন বর্তমান ও ভবিষ্যতের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে।’

সেমিনারে প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন বলেন, ‘১৯৪৭, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪—এই চারটি সন্ধিক্ষণ কেবল বছর নয়, বরং প্রতিটির পেছনে রয়েছে বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, চেতনা ও সংগ্রামের ইতিহাস। ১৯৪৭ সালে আমরা ধর্মের ভিত্তিতে পরিচয় খুঁজেছিলাম, কিন্তু ১৯৭১-এ এসে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনি। ১৯৯০-এর আন্দোলন আমাদের দেখিয়েছে যে জনগণই প্রকৃত শক্তির উৎস, আর ২০২৪ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, গণতন্ত্রের পথচলা থেমে থাকে না। ইতিহাস আমাদের শেখায়—কোনো জাতি তার অতীত ভুলে গেলে ভবিষ্যৎ পথ হারায়। তাই আমাদের দায়িত্ব, নতুন প্রজন্মকে সঠিক ইতিহাস জানানো, যাতে তারা সচেতন নাগরিক হয়ে গড়ে ওঠে এবং জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে নেতৃত্ব দিতে পারে।’

প্রধান আলোচক ১৯৪৭-এর দেশভাগ, ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ২০২৪-এর জুলাই বিপ্লব এবং বিপ্লব পরবর্তী নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি নিয়ে বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও  ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক খাদিজা খাতুন টুম্পার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।