৩০ জুলাই ২০২৫, ২১:১৯

পাবিপ্রবির লিফটে প্রায়ই আটকা পড়েন শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে উদ্বেগ

পাবিপ্রবির ইউ শেইপের একাডেমিক বিল্ডিংয়ের লিফট  © টিডিসি

‎পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) নতুন দুটি একাডেমিক ভবনের লিফটে প্রায়ই আটকে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ সময় লিফটের ভেতরে আটকে থাকার এসব ঘটনায় ভীতি ও উৎকণ্ঠা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিকে উঠছে নজরদারির অভাবের অভিযোগ।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পাবিপ্রবির ইউ শেইপের একাডেমিক বিল্ডিং-১-এ লিফটে শিক্ষার্থীরা ওঠার কিছুক্ষণ পরই এটি হঠাৎ থেমে যায়। লিফটের দরজা আর খুলছিল না, ভেতরে বাতাস চলাচলের কোনো উপায় ছিল না, ফলে ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীরা দমবন্ধ অনুভব করতে থাকেন। বারবার চেষ্টা করেও লিফট চালু না হওয়ায় অবশেষে জরুরি সহায়তা চান তারা। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রমিক সদস্যরা। তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় ৮ মিনিট পর লিফটের দরজা খুলে শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করা হয়।

‎এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটেছে। আজ বুধবার সকালেও লিফটের সেন্সর কাজ না করায় এক শিক্ষার্থীর হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। ওই শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, গতকালও তার সহপাঠীরা লিফটে প্রায় ৮ মিনিট আটকে ছিলেন।

‎এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে লিফটের রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। ভুক্তভোগী একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘লিফটটা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ভেতরে অক্সিজেন কম ছিল, ভয়ের মধ্যে পড়েছিলাম। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’

আরও পড়ুন: ভিসির চেয়ার টেনে পদ্মা নদীতে ফেলার আহ্বান রাবি ছাত্রদলের নতুন সভাপতির

‎লিফট বিড়ম্বনার প্রত্যক্ষদর্শী ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন তাকবীর বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুরের দিকে পশ্চিম পাশের মাঝের লিফটে আমরা চারজনসহ অন্য ডিপার্টমেন্টের তিনজন (দুজন মেয়ে শিক্ষার্থী) আটকে যাই। প্রায় ৭-৮ মিনিট পরে আমরা চিল্লাপাল্লা করলে বাইরে থেকে সম্ভবত কাজ করা শ্রমিকেরা দরজা টেনে খুলে আমাদের টেনে তুলেন। এতে করে আমরা অনেক ভয় পাই। আজকে আবার সেন্সর কাজ না করায় লিফট হঠাৎ আটকে যাওয়ায় আমার হাতে আঘাত লাগে। এ লিফট বিড়ম্বনার কারণে এক প্রকার আতঙ্কের শিকার ইউ শেইফ বিল্ডিংয়ের শিক্ষার্থীরা।’

‎আই শেইপ বিল্ডিংয়ে লিফটে আটকা পড়া শিক্ষার্থী সমাজকর্ম বিভাগের আকাশ কুমার বলেন, ‘গত দুই দিন আগে আমি ও আমার বন্ধু লিফটের জন্য সুইচ চেপে প্রায় ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকি। কিন্তু লিফট খুলছিল না। পরবর্তী সময়ে অন্য লিফটে উঠে পড়ি, কিন্তু আট তলায় গিয়ে আমাদের লিফট খুলছিল না অনেক চেষ্টার পর প্রায় পাচ মিনিট পর আমরা বের হই।’

‎এ বিষয়ে প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী (সিভিল) নাঈম রেজওয়ানের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে যোগাযোগ করলে বলেন, বাইরে সাইটের কাজে আছেন তিনি। অফিসে গিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলবেন।

‎বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা বিষয়টি অবগত আছি। আমরা সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের বারবার বলেছি লিফটের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। এ ধরনের সমস্যা প্রতিনিয়ত দেখা দেওয়ার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভীত হয়ে পড়ছে। আমি আবারও তাদের বলব দ্রুত যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’