‘এখন থেকে আমাদের নিয়মিত খুশি রাখবা’—ধর্ষণের ভিডিও পাঠিয়ে বলেছিলেন সেই ২ শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণ এবং ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নিয়মিত খুশি রাখার আর্জি জানাতেন অভিযুক্তরা। অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থ।
এ ঘটনায় গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ ও ২০ জুন সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী সেই নারী শিক্ষার্থী।
মামলার এজাহারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে আনুমানিক রাত ৮ ঘটিকার সময় অভিযুক্ত শান্ত তারা আদনানকে নিয়ে রিকাবী বাজার একটি কনসার্টে যাওয়ার জন্য কোতোয়ালি মডেল থানাধীন আখালিয়া খুলিয়াপাড়াস্থ মেসে যান ঐ নারী শিক্ষার্থী।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মেসে যাওয়ার পর আদনান থাকে কোমল পানীয় খেতে দেন। কোমল পানীয় খেয়ে কনসার্টের উদ্দেশ্যে সুবিদবাজারে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করে ঐ নারী শিক্ষার্থী। পরে তাকে হলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন মেয়েটি। তখন আদনান এবং পার্থ তাকে হলে পৌঁছে না দিয়ে পুনরায় আদনানের মেসে নিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বলে। এরপর আদনান এবং পার্থ ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী সেই নারী শিক্ষার্থী মামলার এজহারে বলেন, ‘পরদিন সকালে আনুমানিক ৯ ঘটিকার সময় ঘুম ভাঙ্গলে আদনানের বিছানায় দেখতে পাই। তখন পাশের বিছানায় শুয়ে থাকা শান্ত তারা আদনান আমাকে কাপড় পরে চলে যেতে বলে। তখন আমি জোরে কান্নার চেষ্টা করলে শান্ত তারা আদনান আমাকে মারধর করতে উদ্যত হয়। তখন প্রাণ বাঁচাতে আমি দ্রুত হলে চলে যাওয়ার সময় আদনান আমাকে বলেন, ঘটনা কাউকে বললে তোরই ক্ষতি হবে। আমি ঘটনা কাউকে জানাবো না মর্মে আশ্বাস দিয়ে প্রাণ রক্ষা করে কোন মতে ঘটনাস্থল থেকে হলে চলে যাই।’
এজহারে তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পরেরদিন সন্ধ্যায় স্বাগত দাস পার্থ তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ থেকে আমার হোয়াটসঅ্যাপে আমার কিছু নগ্ন ছবি ও কয়েকটি নগ্ন ভিডিও ক্লিপ পাঠিয়ে বলে, যদি তুমি আমার বা আদনানের বিষয়ে কারো কাছে কোন অভিযোগ করো তাহলে তোমার এসব ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিব।’
পরবর্তীতে গত ১৮ জুন আদনান ও পার্থ আমার সাথে ক্যাম্পাসে দেখা করে বলেন, ‘তোমার ভিডিও ক্লিপ ও ছবি আমাদের কাছে আছে। এখন থেকে তুমি নিয়মিত আমার মেসে যাবে। আমাদেরকে খুশী রাখবে। অন্যথায় আমরা তোমার ভিডিও ও ফটো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেব।’
এ ঘটনায় গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৩) ধরা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(১)/ ৮(২) ও ৮(৩) ধারায় মামলা করেন তিনি।