সর্বশেষ বিজয়ী ছাত্রদলের পূর্ণ প্যানেল

২১ বছর ধরে অচল শাবিপ্রবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

প্রায় ২১ বছর ধরে অচল রয়েছে দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু)। শাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ সালের ২৫ আগস্ট। তখন বিরোধী দলে থেকে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে হারিয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের পূর্ণ প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এতে ভিপি পদে কামরুল হাসান কাবেরী ও জিএস পদে আবদুল্লাহ আল মামুন নির্বাচিত হন। এরপর আর কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২১ বছর ধরে শাকসু অচল হয়ে থাকলেও চালুর কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

জানা গেছে, বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল হিসেবে খ্যাত সিলেটের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ হচ্ছে শাবিপ্রবি। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় এবং ১৯৯১ সালে এর একাডেমিক যাত্রা শুরু করে। শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (শাকসু) কার্যক্রমও শুরু হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হলেও শাকসু নির্বাচন নিয়ে শাবিপ্রবি প্রশাসনের কোনো ধরনের তৎপরতা পরিলক্ষিত হয়নি। ঠিক কবে আয়োজন করা হবে শাকসু নির্বাচন সে বিষয়েও কিছু বলতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

শাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতে, শাকসু না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে সেভাবে ছাত্র নেতৃত্ব বের হয়ে আসছে না। নেই শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের মতো বড় কোনো প্ল্যাটফর্ম। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের কমিটি থাকলেও তাদের কাছে নিজ নিজ সংগঠনের স্বার্থ প্রধান্য পাচ্ছে। একটি সূত্র জানায়, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে অবস্থান করলে ছাত্রদল ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেই তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। শুধু বাম ধারার কয়েকটি সংগঠনকে মাঝে মাঝে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মাঠে নামতে দেখা যায়। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রুহুল আমিন বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষা এবং দাবি আদায়ের সবচেয়ে বৃহৎ প্ল্যাটফর্ম হলো শাকসু। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে আমরা সহযোগিতা করব এবং অংশগ্রহণ করব।

শাবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি এমএ রাকিব বলেন, ছাত্রদল সব সময় নির্বাচনমুখী। নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে আমরা অবশ্যই অংশগ্রহণ করব। তবে তার আগে ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক প্রসেনজিৎ রুদ্র বলেন, শাকসু নির্বাচন দেওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবশ্যই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, আমরা চাই অতি দ্রুত শাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক এবং ছাত্র নেতৃত্বের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠুক। 

এ বিষয়ে শাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাকসুর সঙ্গে সম্পর্কিত সবার সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলছেন, শাকসু না থাকায় শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ের মতো বড় কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই।


সর্বশেষ সংবাদ