২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:২২

শীতের সূর্যের আলোতে ঝলমল মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাস

কুয়াশার চাদরে মাভাবিপ্রবি ক্যাম্পাস   © টিডিসি ফটো

শীতের সকালে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) এক অনন্য সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় ক্যাম্পাসের সবুজ প্রান্তর। সারি সারি গাছের পাতায় জমে থাকা শিশিরের মুক্তো দানার মতো বিন্দুগুলো সূর্যের আলোতে ঝলমল করে ওঠে।

ভোরে ঘুম থেকে উঠে নানা ধরনের মানুষের আনাগোনা চোখে পড়ে। দেখা যায় ঘন কুয়াশার মধ্যে সতেজ বায়ুতে হাঁটে বা দৌড়ায়, ফিটনেস ধরে রাখতে ব্যায়াম করে, শখের বশে গ্রামাঞ্চলে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে, কেউ কেনাকাটার জন্য গ্রামের হাটে ছুটে, কেউ গরম চায়ের কাপে চুমুক দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের আশেপাশে এবং অন্যান্য স্থানীয় চায়ের দোকানে ভিড় থাকে বেশি। শীতের পিঠা-পুলি আর গরম চা উপভোগ করতে শিক্ষার্থীদের এক আনন্দঘন সময় কাটে। সূর্যের প্রথম রশ্মি কুয়াশা ভেদ করে যখন গাছের পাতায় পড়ে, তখন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে এক অনন্য আলোর খেল। আবার হাতির কবরে , বিজয় অঙ্গনে, জুয়েল চত্বর, স্টেডিয়াম, হল চত্বর, তৃতীয় অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে বসে প্রিয় মানুষদের নিয়ে কুয়াশার মোড়া প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্রিয় সময়।

ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোযুক্ত শীতকালীন পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক পরিধান করে। বিকেলে মাঠে খেলা এবং ক্যাম্পাস গানের আসর যেন ক্যাম্পাসের প্রাণকে আরও উজ্জীবিত করে তুলছে। শীত শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, ক্যাম্পাসের প্রকৃতির জন্যও এক নতুন রূপ।

গাছের পাতায় জমে থাকে শিশিরবিন্দু, অতিথি পাখির ডানার ঝাপটায় উঠে আসে কুয়াশায় এবং ফুলের উপর সূর্যের ঝিলমিল প্রতিফলন। শীতের সকাল যেমন ক্লাসের ব্যস্ততায় পূর্ণ থাকে, তেমনই শিক্ষার্থীদের জন্য মাভাবিপ্রবির এই পরিবেশ এক নির্মল প্রশান্তি নিয়ে আসে। প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে ক্যাম্পাস যেন আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। শীতের সকালের এই অভিজ্ঞতা মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের স্মৃতিতে ক্যাম্পাস জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।

শীত কিংবা গ্রীষ্ম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কখনো ঘুমাই না। কেউ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে রাত পার করছে, কেউ প্রিয়জনের সাথে ফোনে কথা বলছে, কেউ চিন্তায় জেগে আছে, তাদের মধ্যেও চাকরি প্রত্যাশী কিংবা ভালো ফলাফল প্রত্যাশীরা অনেক রাত জেগে পড়ে। একদিকে একদল কাক ডাকা ভোরে উঠে নৈমিত্তিক কাজে। 

পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়াল সাহা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতের সকাল মানেই কুয়াশাচ্ছন্ন প্রাঙ্গণ, উষ্ণ চায়ের কাপে আড্ডা, আর কম্বলের মায়া ছেড়ে ক্লাসে যাওয়ার আলসেমি। ক্যাম্পাসের সবুজ মাঠ যেন আরও স্নিগ্ধ আর মুগ্ধকর হয়ে ওঠে, যেখানে সবার মাঝে উষ্ণতার আবহ ছড়িয়ে পড়ে। 

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জেবা সামিহা বলেন, ফুলের ক্যাম্পাস মাওলানা ভাসানী সারা বছরই ফুলের সৌরভে ভরে থাকে, তবে শীতের সকালে তা যেন আরও অপূর্ব রূপ ধারণ করে। কুয়াশার চাদর ভেদ করে রোদের কোমল পরশে সূর্যমুখী ফুলগুলোর হাসি যেন শীতের সকালকে বরণ করে।

তিনি আরও বলেন, এই মনোরম পরিবেশে বন্ধুদের আড্ডা জমে ওঠে, ক্লাসের ব্যস্ততা আর ক্যান্টিনের মজার খাবারের স্বাদে দিনটা হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত। শীতের প্রতিটি সকাল আমাদের ক্যাম্পাসে এক অনন্য গল্পের জন্ম দেয়, যা স্মৃতিতে চিরভাস্বর হয়ে থাকে।