লোডশেডিংয়ের মধ্যে তরুণীকে নিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে হাবিপ্রবি ছাত্র, বাধা দেওয়ায় সিনিয়রকে মারধর
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) সন্ধ্যার পর লোডশেডিং এর সময় এক তরুণীকে নিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ছিলেন ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ। এসময় বিষয়টি দেখে ফেলেন ১৭ ব্যাচের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের শিক্ষার্থী শামীম রেজা। এসময় তিনি ক্যাম্পাসে এরকম কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে পরবর্তীতে হলের রুমে ঢুকে তাকে মারধর করে জুনিয়র শিক্ষার্থী সাজ্জাদ।
এই ঘটনার ১৬ দিন পেরিয়ে গেলেও হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে প্রশাসনিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ১৭ ব্যাচের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের শিক্ষার্থী শামীম রেজা গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যার পর অনুষদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় লোডশেডিং এর মধ্যে রাস্তার পাশে তিনি অভিযুক্ত ১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদকে এক তরুণীর সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্তে দেখলে ক্যাম্পাসে এমন কিছু কিছু করতে নিষেধ করেন। এরই মধ্যে কথা বলার এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
কথা কাটাকাটির জের ধরে সেদিন রাত সাড়ে ১২টায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হলে শামীম রেজার রুমে ঢুকে সাজ্জাদের অনুসারী ১০-১৫ জন তার উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। হামলার ঘটনা জানার পর রাতেই ওই হলের হল সুপার প্রফেসর ড. আবু খায়ের মো. মুক্তাদিরুল বারী চৌধুরী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. শামসুজ্জোহাসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক ওই হলেই দুই পক্ষের সাথে বসে সবকিছু শোনার পর হামলাকারী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরকে আশ্বাস দেয়।
এই ঘটনার ১৬ দিন পর আজকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২৬ অক্টোবর আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল সায়েন্সের ১৭ ব্যাচের শামীম রেজার রুমে ঢুকে তার উপর একই হলের ২০ থেকে ৩০ জন অতর্কিত হামলা চালায়। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। শুধু তাই নয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ জানালেও প্রায় ১৬ দিন পেরিয়ে গেছে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো সুস্পষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছি।
শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটামের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘হামলার দিন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানে গিয়েছিলাম এবং সেখানে হল প্রশাসনও ছিল। আমরা তাৎক্ষণিক কিছু হামলাকারীর নামও পেয়েছি। এছাড়াও ভুক্তভোগীর একটি লিখিত অভিযোগও আমরা পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠনের চেষ্টা করছি আর আজই আমরা সেটি ফাইনাল করবো। তদন্ত কমিটি কাজ করবে এবং কমিটির কাজের উপর ভিত্তি করে যে সুপারিশ হবে আমরা সেটি বাস্তবায়ন করবো।
“শুধু তাই নয় আমরা তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি, শিক্ষার্থীদের চাওয়ার প্রেক্ষিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ করার । তারপর ভিসি মহোদয় যে সিদ্ধান্ত দিবেন সেটাই আমরা বাস্তবায়ন করবো।”