জ্যেষ্ঠ হয়েও দপ্তর প্রধান হতে পারেননি রিপন আলী
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী রিপন আলী। ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল প্রকৌশলী (ইইই) হিসেবে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গে আরেক প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ ২০১৩ সালের ৬ এপ্রিল প্রকৌশলী (সিভিল) হিসেবে যোগ দেন। জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী রিপন আলী প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হওয়ার কথা থাকলেও তিনি সেটি হতে পারেননি। নিয়ম ভেঙে দপ্তর প্রধান (ভারপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী) করা হয়েছে ফরিদ আহমেদকে। এ নিয়ে রিপন আলী একাধিকবার প্রশাসনে চিঠি দিলেও সেটিতে কর্ণপাত করেননি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সূত্র বলছে, কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ ঘটনার জেরে ২০২১ সালের ২৯ জুন প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম চাকরি ছেড়ে দেন। এর পর থেকে প্রধান প্রকৌশলীর পদটি ফাঁকা। তবে দপ্তর পরিচালনা করার জন্য ৩০ জুন নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) ফরিদ আহমেদকে তৎকালীন উপাচার্য ড. রোস্তম আলীর অনুমোদনক্রমে রুটিন দায়িত্ব পালন করার জন্য একটি নোট দেওয়া হয়। ওই নোটে ফরিদ আহমেদকে রুটিন দায়িত্ব দেওয়ার জন্য ফরিদ আহমেদ নিজে এবং দপ্তরের আরেক প্রকৌশলী জহির মুহা. জিয়াউল আবেদীন সুপারিশ করেন। ওই নোটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ৩০ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান হিসেবে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন ফরিদ আহমেদ। এ নিয়ে সাবেক উপাচার্য ড. হাফিজা খাতুন ২৫ মে ফরিদ আহমেদকে আবার ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দেন। এই দায়িত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ২ জুন রিপন আলী এবং জহির মুহা. জিয়াউল আবেদীন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলীর (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্ব দেওয়ার জন্য চিঠি দেন।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাসে পাবিপ্রবি ছাত্রলীগ কর্মীকে কোপাল দুর্বৃত্তরা
ওই চিঠিতে এই দুই প্রকৌশলী উল্লেখ করেন, ফরিদ আহমেদকে তৎকালীন উপাচার্যের অনুমতিক্রমে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেখানে প্রশাসনিক কোনো আদেশ জারি করা হয়নি, সেটি শুধু একটি নোট ছিল। যেটি বিধিবহির্ভূত ছিল। একই সঙ্গে ওই নোটে ফরিদ আহমেদ নিজেই নিজেকে প্রধান প্রকৌশলী করার জন্য সুপারিশ করেছেন, যা বিধিবহির্ভূত। ওই নোটে নির্বাহী প্রকৌশলীর (ইইই) কোনো সুপারিশ নেওয়া হয়নি।
প্রকৌশল দপ্তরের একটি সূত্র বলছে, প্রকৌশল দপ্তরের প্রকৌশলীদের দীর্ঘদিন ধরে জ্যেষ্ঠতার কোনো প্রশাসনিক আদেশ ছিল না। এই বছর প্রকৌশলীরা রেজিস্ট্রারকে জেষ্ঠ্যতা ঠিক করে দেওয়ার জন্য আবেদন করলে রেজিস্ট্রার অফিস রিপন আলীকে সর্বজ্যেষ্ঠ, এরপর ফরিদ আহমেদকে, তারপর জহির মুহা. জিয়াউল আবেদীনকে জ্যেষ্ঠ হিসেবে চিঠি দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে রিপন আলী বলেন, ‘আমি দপ্তরে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। কিন্তু আমাকে দপ্তর প্রধান না করে করা হয়েছে আমার জুনিয়র একজনকে। এটা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। আমি প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাব, আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু যেন আমাকে দেওয়া হয়।’
আরও পড়ুন: পাবিপ্রবিতে ছয় সমন্বয়ক ও ১৯ সহ-সমন্বয়কের পদত্যাগ
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি যাকে খুশি তাকে নিয়োগ করতে পারেন । এখানে নির্দিষ্ট কোনো রুলস নেই। এর আগে ও এই পদের বাইরের কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল বিভাগের কাজ বেশি থাকায় হয়তো আগের দুই ভিসি ফরিদকে দায়িত্ব দিয়েছেন। যেহেতু প্রকৌশলীর সঙ্গে ভিসির কাজ বেশি থাকে। রোস্তম স্যার যে রাখছে, তা আমি শেষ দিকে এসে জানতে পারি। এ ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা মেনে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। রিপন একাধিকবার আমার কাছে চিঠি দিয়েছেন। আমি উপাচার্যের কাছে চিঠি ,ফাইল পৌঁছে দিয়েছি। কিন্তু বিগত দিনে উপাচার্য তা আমলে নেননি।’