গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মেসে হয়রানি, আটক ৩
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) সংলগ্ন ছাত্রী মেসে (বিশ্বাস বাড়ি) গভীর রাতে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে মেস মালিকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়ের করলে যশোর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিকেল সাড়ে তিনটায় আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
জানা যায়, রবিবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে যবিপ্রবি সংলগ্ন আমবটতলার বিশ্বাস বাড়ি ছাত্রী মেসে বাড়ির ভাড়াটিয়া ও কেয়ারটেকার মানিক মন্ডলের সহযোগিতায় সজীব মোল্যা নামে এক ব্যক্তি প্রবেশ করে বাড়ির ছাদে অবস্থান নেয়। রাত সাড়ে তিনটার দিকে সজীব মোল্যা মেসের ২য় তলার ছাত্রীদের একটি রুমের দরজায় পানি চেয়ে ঠক ঠক শব্দ করেন। কিন্তু রুমের ছাত্রীরা পুরুষের কণ্ঠ শুনে পানি দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্ত সজীব দরজা ভেঙে রুমে প্রবেশ করার হুমকি ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীদের জানালে শিক্ষার্থীরা এসে সজীব মোল্যা, মানিক মন্ডল ও বাড়ির মালিক রবিউল ইসলামকে আটক করে মারধর করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, বিশ্বাস বাড়ি মেসের মালিক রবিউল ইসলামের নির্দেশনায় বাড়ির কেয়ারটেকার মানিক মন্ডলের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় নড়াইলের বাসিন্দা সজীব মোল্যা মেসের ছাদে যায় ও পরবর্তীতে গভীর রাতে ছাত্রীদের রুমে কড়া নাড়ে। কিন্তু দরজা না খুললে হুমকি-ধমকি দেয় ও খালি গায়ে মেসের মধ্যে সজীব ঘুরতে থাকে।
ভুক্তভোগী জাইমা (ছদ্মনাম) বলেন, ‘রবিবার রাতে বিভিন্ন সময়ে আমাদের মেসের আশেপাশে দুইজন ঘুরছিলেন। রাতে এগারোটার দিকে আমি ছাদে গেলে তখন দেখি তারা আমাদের মেয়েদের মেসের ছাদে বসে আছে। আমি কিছু না বলে রুমে চলে যায়। রাত তিনটার দিকে আমাদের রুমের দরজায় দুইজন ধাক্কা দিতে থাকে। একপর্যায়ে অনেক খারাপ ভাষায় আমাদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করতে থাকে ও হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। পরে আমরা আশেপাশের লোকজনদের ডাক দিয়ে তাদের আটকে করে পুলিশে দেই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলবো মেসে যেনো আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ও হলগুলো এ মাসের মধ্যে খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ও প্রভোস্টের সাথে ঘটনাস্থলে আসি ভোর বেলায়। সেখানে শিক্ষার্থীরা আসামিদের পুলিশে দিতে বলাটা আমার কাছে যৌক্তিক মনে হওয়ায় আমি থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার এজহার করি। শিক্ষার্থীরা যেনো ন্যায্য বিচার পায় তার জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সাথে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রশাসন টহল দেবে।’