পুলিশের নিরাপত্তায় পরীক্ষা দিলেন ডুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা
গাজীপুরে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) ছাত্রলীগ নেতাদের পরীক্ষায় পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সোয়া ৯টার দিকে এ ঘটনায় ডুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের মেইন গেটে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। গত কয়েক দিন থেকেই বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পরীক্ষা নিচ্ছে প্রশাসন, এমন অভিযোগ করে আসছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ডুয়েট সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের গেটের বাইরে পুলিশের একটি ভ্যান অবস্থান করতে দেখা যায়। এ ছাড়া ডুয়েট ছাত্রকল্যাণের পরিচালক, সহকারী পরিচালকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষককে ক্যাম্পাসের গেটে তদারক করতে দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ডুয়েটের চলতি সেমিস্টারের স্থগিত পরীক্ষা শুরু ১৭ সেপ্টেম্বর
ছাত্রলীগের জন্য পুলিশের বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা কি না, জানতে চাইলে ডুয়েট ছাত্রকল্যাণের পরিচালক ড. উৎপল কুমার বিষয়টি অস্বীকার করে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করিনি। পরীক্ষার সময় স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ কমিশনার বরাবর নিরাপত্তা চাই। আর পুলিশের খুবই অল্প সংখ্যক সদস্য ক্যাম্পাসে এসেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, এ ধরনের পরীক্ষায় সাধারণত কোনও পুলিশ বা নিরাপত্তাবাহিনী থাকে না। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাকর্মীরাই পরীক্ষা শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ও বিকেল দুই শিফটের পরীক্ষায় ছাত্রলীগের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। তাদের কয়েকজন হলেন পুরকৌশল বিভাগের আল হাদি, যন্ত্রকৌশল বিভাগের নূর মোহাম্মদ আকাশ, আব্দুল্লাহ ইমন এবং সোহান সিকদার।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতাদের অত্যাচারে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেননি সাধারণ কোনো শিক্ষার্থী। সর্বশেষ কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকারীদের নানাভাবে হেনস্তা করেছে ডুয়েট ছাত্রলীগ। হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ডুয়েটে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছিল। সবকিছু প্রমাণসহ প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হলেও ডুয়েট প্রশাসন কোনো ধরনের বিচার না করেই বিশেষ নিরাপত্তায় পরীক্ষা নিয়ে তাদের বাঁচিয়ে দিচ্ছে।
ডুয়েটের শিক্ষকরা কখনোই সাধারণ শিক্ষার্থীবান্ধব হতে পারেনি, এমনটা মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। ডুয়েট প্রশাসনের কাজেও তারা হতাশা প্রকাশ করেন।
তারা বলছেন, ভার্সিটি খোলার প্রথম দিন থেকেই বিচারের দাবি জানিয়ে আসছি। অন্যায়কারীদের বিচার হওয়া ছাড়া আমরা পরীক্ষায় বসবো না, এমনটাও জানিয়েছি। ডুয়েট প্রশাসন অপরাধীদের বিচার করবে বলে নিশ্চয়তা দিয়ে আমাদের পরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানায়। কিন্তু এখন গোপনে তারাই ছাত্রলীগকে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে।