১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৬

শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের  শিকার 

শাবিপ্রবি  © সংগৃহীত

 

সিলেটে প্রতিনিয়ত সিএনজি চালক ও বখাটেদের খপ্পরে পড়ে ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। তবে সবচেয়ে বেশি ছিনতাইয়ের শিকার নারী শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সিলেটে টিউশনে কিংবা যাতায়াতের সময় সিএনজি চক্র শিক্ষার্থীদেরকে টার্গেট করেন। বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা কোথাও যাতায়াত করলে গন্তব্য স্থানে পৌঁছে না দিয়ে বরং উলটো পথে নিয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের সেন্সলেস মেডিসিন ব্যবহার করে হাতিয়ে নেন টাকা, মোবাইলফোন, অলংকার ইত্যাদি। প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিনিয়ত ছিনতাই ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু ক্যাম্পাসের বাহিরে নয়, ক্যাম্পাসের ভিতরেও মাঝে মাঝে ছিনতাইয়ের শিকার শিক্ষার্থীরা। 

লোকপ্রশাসন বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মালেক নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমার বন্ধু সিলেটের বন্দরবাজার থেকে কদমতলী যাওয়ার উদ্দেশ্যে এক সিএনজিতে উঠে। ওই সিএনজিতে মোট ড্রাইভারসহ তিনজন ছিল যারা সবাই ওই চক্রের সদস্য। ওরা সোবহানীঘাট পয়েন্টে এসে হঠাৎ তাকে বলে যে আমরা তো ওইদিকে যাব না, আমাদের নাইওরপুল পয়েন্টের দিকে যাওয়া লাগবে। এটা বলে তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি খুব দ্রুত চলে যায়। ঠিক ওইসময় সে তার পকেটে হাত দিয়ে দেখে তার মানিবেগ নেই, যেখানে কয়েক হাজার টাকা এবং তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্ড ছিল। 

আরও পড়ুন: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে ৮১ শতাংশ মানুষ  

রবিবার ( ১৫ সেপ্টেম্বর ) সমাজকর্ম বিভাগের শাকারিয়া আলম নামের এক শিক্ষার্থী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসা করে ক্যাম্পাসে ফেরার সময় ৪ জন যুবক তাকে পেছন থেকে টার্গেট করেন। শাকারিয়া বলেন, আমি যখন বুঝতে পারছি তারা আমাকে ফলো করছেন তখনই আমি একটা সিএনজিতে উঠি। তাৎক্ষণিক ঐ ৪ জন যুবক সিএনজিতে উঠেপড়ে। আরেকজন যাত্রী সিএনজিতে উঠতে চাইলে তারা উঠতে দেয়নি। কিছুক্ষণ পর তারা সিএনজি বাগবাড়ির একটা নির্জন জায়গায় নিয়ে এসে আমাকে নামতে বলে। এসময় থানার ভয় দেখিয়ে ফোন কেড়ে নিতে চায়। তখন আমি চিৎকার করলে কয়েকজন দৌড়ে আসলে ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যাই।

১০ সেপ্টেম্বর সমাজকর্ম বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, ভার্সিটি গেইট থেকে বন্দরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সিএনজিতে উঠি। আগে থেকেই একজন মহিলা বসে ছিলেন সিএনজিতে। মাউন্ট এডোরা হসপিটালের কাছে আসার পর হঠাৎ করে তিনি মাথায় তেল দেয়া শুরু করেন। তেলের গন্ধ এতো তীব্র ছিলো, মনে হচ্ছিল এক মিনিটেই আমার মাইগ্রেন শুরু হয়ে গেছে। মহিলা একটু পর পর আমার কাছে সময় জানতে চাচ্ছিল, আমিও বলছিলাম। পাঠানটুলা আসার পর আমি ঝাপসা দেখতেছি। পরে বুঝতে পারলাম সিএনজিওয়ালা আর কাউকে সিএনজি তে তুলছেন না। সুবিদবাজারের কাছাকাছি এসে মনে হচ্ছিল আমি বমি করে ফেলবো। বাধ্য হয়ে  সিএনজিওয়ালাকে দাঁড়াতে বললাম, উনি দাঁড়ালো না। সুবিদবাজার পয়েন্টে এসে আমার অবস্থা বুঝতে পেরে যখন রেগে বললাম থামানোর জন্য, সিএনজি থেকে নামার পর বমি করে ফেলি। আর কিছুক্ষণ সময় লেইট হলে হয়ত তারা আমার মোবাইলফোন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যেত। 

৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নবনীতা কর্মকার বাসায় পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে সিলেটের কদমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে খোঁজারখোলা পয়েন্টে আসলে  তিনজন ছিনতাইকারী রিকশা আটক করেন। এসময় ছুরির ভয় দেখিয়ে সাবেক ওই ছাত্রীর কাছ থেকে  মুঠোফোন ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।

গত বছর আনুমানিক রাত ৮ টার দিকে পরিসংখ্যান বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থী টিউশন থেকে ফেরার সময় বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের পাশ থেকে ২ জন বখাটে যুবক ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায়। 

এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনার নিন্দা জানিয়ে  প্রশাসনের নজরদারি বাড়িয়ে ছিনতাইকারী চক্রকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের দাবি  শাবিপ্রবি’ শিক্ষার্থীদের।