১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২:৩৯

ভিসিবিরোধী আন্দোলনে জড়িত দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এবং ভিসিবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চাপে সম্মত হওয়ায় উচ্চশিক্ষালয়টির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতারের অনুমোদনক্রমে এবং রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর (অব.) মো. আব্দুল হাই কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিরত অবস্থায় চাঁবিপ্রবি আইন- ২০২০ এর ৪৩ (৪) ও ৪৩(৫) ধারার পরিপন্থি কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা অমান্য করায় এবং নিয়োগ পত্রের  ৪নং শর্তানুসারে প্রবেশনারি পিরিয়ডে চাকুরি সন্তোষজনক না হওয়ায় কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক প্রিন্স মাহমুদ ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

আরও পড়ুন: চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রথম অর্থবছরে ১১ অনিয়ম

এতে আরও বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এই আদেশ জারি করা হইল এবং ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

অব্যাহত প্রাপ্ত শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চলমান ভিসিবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার সরকার পতনের আগে বিগত ৩০ জুলাই থেকে ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছেন। শিক্ষার্থীরা সরকার পতনের থেকে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে তাদের কাছ থেকে লিখিত নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষকরা তাদের সাথে যোগদানের পর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ক্ষেপে যান। পরবর্তীতে নানা অভিযোগে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে থাকেন।

আরও পড়ুন: ৪০ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রার নিয়োগের অভিযোগ ইসলামি আরবির ভিসির বিরুদ্ধে

এছাড়াও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী নেতাদের শিক্ষার্থীদের তথ্য দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। একই সাথে তিনি আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের তথ্য গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের দিয়েছেন বলেও অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অব্যাহত প্রাপ্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা নিজেদেরকে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এত দিন দাপটের সাথে চাকরি করেছেন। আবার সরকার পরিবর্তনের পর ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন।

অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলোজি বিভাগের প্রভাষক নাজিম উদ্দিন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে তাদের সাথে সম্মত হতে বাধ্য হয়েছি। এছাড়াও আমাদের শিক্ষকদের একটি গ্রুপে একটি পোস্ট করার পর বিষয়টি নিয়ে আমাদের মার্ক করা হয়।

চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মেজর (অব.) মো. আব্দুল হাই দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, তাদের প্রবেশনারি পিরিয়ড চলছিল এবং তা সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। 

তবে বিষয়টি সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। একাধিকবার চেষ্টা করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।