১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৮

লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিতে সক্রিয় শিক্ষককে উপাচার্য চান না শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক। এদিকে সরকার পতনের পর একে একে পদত্যাগ করতে থাকেন হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, প্রভোস্ট সহ বিভিন্ন পদের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ ৷ গুরুত্বপূর্ণ এসব পদের পদত্যাগের ফলে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে উচ্চশিক্ষার এই প্রতিষ্ঠানটি।

ফলে দীর্ঘদিন যাবত স্থবির রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এতে হতাশা আর অস্থিরতা দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। দীর্ঘদিন শ্রেণীকক্ষে ফিরতে না পারায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকার ফলে দিনদিন আবাসিক হল গুলোতেও বাড়ছে নিরাপত্তার শঙ্কা। কবে ফিরে পাবে দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তা নিয়েও প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

তবে কেমন হবে উপাচার্য তা নিয়েও বেশ জল্পনা কল্পনা করছেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের দাবি উপাচার্য হতে হবে রাজনীতিমুক্ত, বিজ্ঞানমনষ্ক ও শিক্ষার্থীবান্ধব, যার নেতৃত্বে শুধু দেশেই না আন্তর্জাতিক পর্যায়েও শিক্ষার গুনগত মান ভূয়সী প্রশংসিত হবে। শিক্ষার্থীদের দাবি, দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় রয়েছেন এমন উপাচার্য তারা চান না। এমন শিক্ষক উপাচার্য হওয়ার পর নিজের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করেন বলেও তারা অভিযোগ করেন। এমনকি দলীয় ছাত্র  রাজনীতির এজেন্ডা বাস্তবায়নে কিছু শিক্ষার্থীও তখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। 

সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া তানজিম আলভি বলেন, আমরা বিগত দিনগুলোতে দেখে আসছি বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার ফলেকম যোগ্য ভিসি নিয়োগ দেওয়া হতো অন্যদের যোগ্যতা থাকা সত্বেও। দলীয় উপাচার্য আসলে পাওয়ার প্র্যাকটিস হয়। এমনকি শিক্ষার্থীদের মতামতকে উপেক্ষা করে স্বৈরাচারী মনোভাব দেখান বলেও তিনি জানান। তাই আমাদের দাবি এমন শিক্ষক আমরা চাই যিনি দলীয় রাজনীতি মুক্ত হয়ে শিক্ষা গবেষণায় প্রাধান্য দেবে। 

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাকিব মিয়া বলেন, উপাচার্য হিসেবে দলীয় কাউকে চাই না কারণ দলীয় কেউ আসলে নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রতিটা সেক্টরে দলীয়করণ করে পুরো সিস্টেমটা উল্টে দেওয়া হয়। তাই আমরা এমন একজন উপাচার্য চাই, যিনি হবেন নিরপেক্ষ, দূর্নীতিমুক্ত এবং শিক্ষার্থীবান্ধব। যার রাজনৈতিক  মতাদর্শ কর্মক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কে বিজ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও একাডেমিক পর্যায়ে রুল মডেল হিসেবে তৈরী করবেন।  

ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জাবের বলেন, হাজারো শিক্ষার্থীর প্রাণের বিনিময়ে আমরা নতুন একটা দেশ পেয়েছি। এখন কোন কিছুতেই আমরা বৈষম্য চাই না। দেশের প্রতিটা সেক্টরে আমরা সৎ, যোগ্য নেতৃত্ব চাই যিনি দলীয় রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে সবার জন্য কাজ করবেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবেও এমন একজনকে চাই যিনি লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির সাথে জড়িত হবেন না। সকল দল মতের মানুষকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে কাজ করে যাবেন।