১২ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২৯

যবিপ্রবিতে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

শনিবার (১০ আগস্ট) উপাচার্যের আদেশক্রমে রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: আহসান হাবীব স্বাক্ষরিত একই স্বাক্ষর ও তারিখে প্রতিস্থাপিত অফিস আদেশে এ তথ্য জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার দুপুরে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ১০৩তম জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। রিজেন্ট বোর্ডের সকল সদস্য ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

এর আগে বেলা ১১টাই যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ, অনুষদীয় ডিনবৃন্দ, প্রভোস্টবৃন্দ, প্রক্টর এবং পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তর) এর সমন্বয়ে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী করণীয় নির্ধারণার্থে উপাচার্য মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভার সুপারিশ পর্যালোচনা করে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

রিজেন্ট সভার প্রারম্ভেই সর্বসম্মতিক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে সকল শিক্ষার্থী শহিদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে। এখনও পর্যন্ত যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন তাদের আশু কামনা করা হয়। ৫ আগস্ট ২০২৪ এর অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করা হয়। একই সাথে চলমান পরিস্থিতিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিরাগত দুষ্কৃতিকারীদের হামলা প্রতিহত করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীবৃন্দসহ সকল শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।

রিজেন্ট বোর্ডের সভায়, অনুষদীয় ডিনবৃন্দের সিদ্ধান্তক্রমে বিশ্ববিদ্যালয় ও আবাসিক হলসমূহ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অনুষদীয় ডিনবৃন্দের সিদ্ধান্তক্রমে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও যবিপ্রবির সকল শিক্ষার্থীদেরকে ‘‘Rules of Discipline for Students’’ এর  Part-1  এর General Rules এর ধারা (Students must not be involved in politics directly or indirectly within the University premises (meeting, demonstration, forming human-chain, creating obstacles to any academic activities); but with the permission of lawful authority of the university and proctor/provost, organizational/other activities can be permitted.) এবং কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে “যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০১” এর ধারা ৪৭ (৫) এবং “সাধারণ আচরণ, শৃঙ্খলা ও আপীল সংক্রান্ত বিধি” এর বিধি-৩ এর (জ) (“কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী রাজনৈতিক মতামত প্রচার করিতে পারিবেন না বা তিনি নিজেকে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সহিত জড়িত করিতে পারিবেন না।”) যথাযথ অনুসরণ করতে হবে। উপরোক্ত আইন/বিধি ও সিদ্ধান্তের আলোকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য সকল প্রকার রাজনীতি সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হলো। যবিপ্রবির উক্ত আইনের ধারা ও এ আদেশ অমান্য করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক শাস্তি প্রদান করা হবে।
 
যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) খালেদা আক্তার, যুগ্ম সচিব ড. মোর্শেদা আক্তার, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, আইসিসিডিআর’বি-এর বায়োসেফটি অ্যান্ড বিএসএল-৩ ল্যাবরেটরির প্রধান ড. আসাদুলগনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. কৌশিক সাহা, ইউজিসি অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এম. এ. রশীদ, যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদ, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মাহবুবুল হক খান, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব প্রমুখ।