ক্যাম্পাস খুললে ক্লাসে ফিরবে সবাই, শুধু ফিরবে না শাবিপ্রবির রুদ্র
দেশের পরিস্থিতি শান্ত হলে ক্যাম্পাস খুলবে। সবার মতো ক্লাসে ফিরবেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। কিন্তু রুদ্র সেন আর ফিরবেন না। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয় গত ১৮ জুলাই। এদিন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে খাল পার হতে গিয়ে ডুবে প্রাণ হারান তিনি।
রুদ্র শাবিপ্রবির কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি দিনাজপুর সদর উপজেলার সুবীর সেন ও শিখা বণিক দম্পতির ছেলে। বড় বোন সুস্মিতা সেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বদ্যিালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
রুদ্রের বোন সুস্মিতা সেন বলেন, অনেক পত্রিকায় খবর এলো, কিন্তু রুদ্র আর তো আসবে না। ছোট থেকেই শান্ত প্রকৃতির ছিল সে। মিছিল-মিটিংয়ে যায়নি। তবে কোটা আন্দোলনে সবাই যাচ্ছে দেখে সেও মনে করেছিল, যাওয়া উচিত। ৬০ বছর বয়স মায়ের। ৭০ বছর বয়সী বাবা। তাদের সন্তান হারানোর শোকের কথা কোন শব্দে বলি। মধ্যবিত্ত পরিবারে আমাদের বড় করে মা-বাবা অনেক স্বপ্ন দেখেছেন।
প্রকৃতির সান্নিধ্য ভালো লাগত রুদ্রের। সুযোগ পেলেই ছুটে যেতেন পাহাড়ে কিংবা ঝরনায়। সর্বশেষ গত ১০ জুলাই সিলেটের উতমা ছড়ার পাথরে বসে তোলা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন তিনি। ক্যাপশন ছিল, ‘আবারও কিছু মেমোরি সিলেটের ডায়েরিতে জমালাম’। রুদ্রের এ ছবিগুলোই বন্ধু-সহপাঠীরা বারবার দেখলেও তাকে আর পাবেন না ক্লাসে।
আরো পড়ুন: আলটিমেটাম শেষ হচ্ছে আজ, আসতে পারে নতুন কর্মসূচি
রুদ্রের বন্ধু ইমতিয়াজ ও সিয়াম গণমাধ্যমকে বলেন, শুরু থেকেই রুদ্র কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছিল। গত ১৮ জুলাই সে পড়ে গিয়ে আঘাত পায়। বিকেলে ছাত্রলীগ মহড়া দেয়। সন্ধ্যার আগ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে তারা মেসে থাকা অনিরাপদ মনে করেন। পরে ভেলায় করে খাল পার হওয়ার সময় পড়ে যান তারা। সবাই সাঁতরে তীরে উঠলেও ডুবে যায় রুদ্র। তাকে পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।