চুয়েটে অনুষ্ঠিত হলো এসিআইয়ের ‘২৪ ঘণ্টা কনক্রিট কিউব’ প্রতিযোগিতা
দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো ‘২৪ ঘণ্টা কংক্রিট কিউব প্রতিযোগিতা’। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েটে) অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সংগঠন আমেরিকান কনক্রিট ইনস্টিটিউট (এসিআই) স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার, চুয়েট।
গত ১৭-১৮ মে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতাটি ঘোষণার পর থেকেই পুরকৌশল সম্পর্কিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে। প্রতিযোগিতাটির প্রথম ধাপে চুয়েটের ৪৬টি দল (১৮০ জন শিক্ষার্থী) রেজিস্ট্রেশন করে। এ আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল অনলাইন সংবাদমাধ্যম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস।
কনক্রিটকে আরও বেশি মজবুত করার শর্তে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মিক্স ডিজাইনের রিপোর্ট জমা দেন। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে প্রাথমিক বাছাই করা হয় ও ২৪টি দলকে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত করা হয়।
দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার প্রথম দিনে সকাল সাড়ে ৮টায় সকল দলের দলনেতারা পুরকৌশল ভবন থেকে তাদের দলের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। পরে সকাল ৯টায় সকল প্রতিযোগিকে পুরকৌশল ভবনের সেমিনার রুমে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর পরপরই অংশগ্রহনকারীরা বিভিন্ন উদ্ভাবনী উপকরণ এবং নিজেদের তৈরি করা হিসেব অনুযায়ী কংক্রিটের কিউব তৈরি করেন। তাদের এই কাজগুলো চুয়েটের শিক্ষকগণ পরিদর্শন করেন এবং বিচারকগণ তাদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করেন।
এসময় চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম পরিদর্শনে এসে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা অনেক আনন্দ উদ্দীপনার সাথে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছে। এরকম ভিন্নধর্মী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের উৎসাহ যোগায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ধরনের সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
দ্বিতীয় দিন ১৮ মে সকাল ৯টায় প্রতিযোগীদের কিউবগুলো যন্ত্রের সাহায্যে ভেঙে সেগুলোর দৃঢ়তা পরীক্ষা করা হয়। এসময় সব প্রতিযোগিরো উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
এ ব্যাপারে এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার, চুয়েটের বিভাগীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. জিএম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এই প্রতিযোগীতার আগে একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে কংক্রিটে গতানুগতিক যে সকল ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয় তার বাইরে সম্ভব্য সকল ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। তারা কংক্রিটের শক্তিমাত্রা, পরিবেশের উপর এর প্রভাব ও খরচ মাথায় রেখে ডিজাইন করেছে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে গতকাল প্রতিযোগিরা ডিজাইন অনুযায়ী কংক্রিট তৈরি করে শনিবার তার শক্তিমাত্রা পরীক্ষা করছে। আমার বিশ্বাস এতে করে শিক্ষার্থীরা পরিবেশবান্ধব সাশ্রয়ী কংক্রিট তৈরির বিষয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস অর্জন করবে।
প্রতিযোগিতাটির অন্যতম আয়োজক এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার, চুয়েটের সভাপতি আবু জাফর গিফারি সাগর বলেন, এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যে কনক্রিট নিয়ে ভাবনা-চিন্তার সৃষ্টি করা এবং শিক্ষার্থীদের কনক্রিট বিষয়ক জ্ঞান অর্জনে উৎসাহিত করা। আমাদের আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এই প্রতিযোগিতার মাধম্যে সবাই কনক্রিটের উপাদান আর এর নির্মাণপ্রণালী সম্পর্কে অনেক শিখতে পেরেছে এবং সবাই অনেক উপভোগও করেছে। এটিই আমাদের আয়োজনের সার্থকতা।
এ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভায় ঘোষণা করা হবে। সেখানেই তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। বিজয়ীদের জন্য পুরষ্কার হিসেবে রয়েছে বিশ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ দৃঢ়, পরিবেশ-বান্ধব ও সাশ্রয়ী কনক্রিট তৈরির উপর ভিত্তি করে তিনটি দলকে এই পুরষ্কার প্রদান করা হবে।