‘বৈষম্যমূলক’ পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে কালো ব্যাজে শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক’ প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে কালো ব্যাজ ধারণ ও মৌন মিছিল করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
সোমবার (১৩ মে) বেলা ১১ টায় শাবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীরসহ বিশ্বদ্যিালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা।
গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয় পেনশন সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়েছে, সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৪ এর উপ-ধারা (২) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, সব স্ব-শাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং এর অধীনস্থ অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরিতে যেসব কর্মকর্তা বা কর্মচারী, তারা যে নামেই অভিহিত হোন না কেন, ১ জুলাই ও তার পরে নতুন যোগদান করবেন, তাদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভুক্ত করা হবে।
শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি মনে করে, এটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত শিক্ষকদের অবমাননাকর একটি নীতি যার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদেরকে বঞ্চিত করা হবে। এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। ঘোষিত প্রজ্ঞাপন শিক্ষক সমাজের জন্য অবমাননাকর। সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নামে শিক্ষকদের সঙ্গে তামাশা করা হচ্ছে। ফলে দেশ মেধাশূন্য হয়ে যাবে।
শিক্ষকরা আরো বলেন, মেধাবীরা দেশে থাকুক এটা হয়তো একটা শ্রেণি চাচ্ছে না। এদেশে শিক্ষকদের কদর করা হয় না বলেই তারা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘বৈষম্যমূলক’ সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিও জানান শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি।
শাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সমালোচনা করে বলেন, শিক্ষকদের নিয়ে সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র চলছে, আমরা ইতোমধ্যে লক্ষ করছি কিছুদিন আগে আমলারা তাদের সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় চাচ্ছে যা অশুভ কিছুর ইঙ্গিত বহন করে।এভাবে সূক্ষ্ণ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশটা তাদের দখলে নিতে চাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন আমরা আগেও বলছি, এখনো বলছি, এবং ভবিষ্যতেও বলবো এই সর্বজনীন পেনশন স্কিম অন্যায়, এটা আমরা মানতে পারিনা।
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর বলেন, সরকারের কাছে নমনীয় ভাষায় আমাদের দাবী উত্থাপন করছি যদি দাবী মেনে নেওয়া নাহয় তাহলে কঠোর কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। তিনি আরো বলেন, সর্বজনীন বলতে আমরা বুঝি, সবার জন্য কিন্তু এটি আমলাদেরকে ব্যাতি রেখে কিভাবে সর্বজনীন হয় তা আমাদের বোধগম্য না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শিক্ষকদের ওপর যে স্কিম চালু করা হচ্ছে, এটি খুবই বৈষম্যমূলক। এ প্রজ্ঞাপন অতি দ্রুত প্রত্যাহারের আবেদন জানান তিনি।