দেশে অপরাধ বিষয় পাঠের ২০ বছর, ডিগ্রি নিয়েছে ১৫ ব্যাচ
- মো. নূর এ আলম নুহাশ
- প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪০ AM , আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৪, ০৬:৪৭ PM
দশকের পর দশক ধরে উন্নত বিশ্বে অপরাধ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার ব্যাপক কদর থাকলেও বাংলাদেশে বিষয়টি একাডেমিক পাঠ হিসেবে অন্তর্ভুক্তিতে তেমন গুরুত্ব পায় নি। তবে যেহেতু দেশে অপরাধের বিস্তৃতি অনেক, তাই এই দেশের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও এ সংক্রান্ত গবেষণার বিষয়ে উচ্চশিক্ষায় এককভাবে ডিগ্রির আওতায় আনার প্রয়োজন ছিল। আর এই প্রয়োজনকে মাথায় রেখে তা বাস্তবে রূপ দেওয়া হয়েছিল আজ থেকে ২০ বছর আগে।
অপরাধ, অপরাধের ধরণ ও কারণের বিস্তর পাঠ ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ২০০৩ সালে শুধু বাংলাদেশে নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বা সিপিএস বিভাগ যাত্রা শুরু করে।
দীর্ঘ বিশ বছরে অপরাধ বিজ্ঞানের পাশাপাশি পুলিশ স্টাডিজ, ফরেনসিক সায়েন্স, নিরাপত্তা, আইন ও এই সম্পর্কিত গবেষণা একাডেমিক পাঠ্যক্রম হিসেবে সার্বিক জ্ঞান শিক্ষার্থীদের প্রদান করেছে বিভাগটি।
দেশে এ সম্পর্কিত পাঠদান ও গবেষণার দ্বার আরও বেশি পরিসরে খুলে দিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির পাশাপাশি ২০২৩ সাল থেকে পিএইচডি ডিগ্রি চালু করেছে মাভাবিপ্রবির এই ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ।
বিভাগের ২০ বছর পূর্তিতে আয়োজিত পুনর্মিলনীতে র্যালি
এ পর্যন্ত বিভাগটি থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছে ১৫টি ব্যাচ। এছাড়া বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ৫টি ব্যাচ অধ্যয়নরত অবস্থায় রয়েছে। সকল ব্যাচেই গড়ে ৫০ জন করে শিক্ষার্থী ছিলেন বা রয়েছেন। বিভাগটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।
আর এই বিভাগের পথচলায় দুই দশক পার করায় সম্প্রতি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজন করে সিপিএস বিভাগের ২০ বছর পূর্তি ও গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন অনুষ্ঠানের। ৮ মার্চ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রায় ৫০০ প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে দিনব্যাপী চলে এই আয়োজন। দিনের শুরুতে প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে এক বিশাল র্যালির মধ্য দিয়ে আয়োজন শুরু হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, কেক কাটা, ক্রীড়া উৎসব, আলোচনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
‘সিপিএস স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ ফান্ডে ১ম ব্যাচের ৫ লক্ষ টাকা অর্থ প্রদান
এছাড়া বিভাগের অসচ্ছল ও পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে এদিন ‘সিপিএস স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ গঠন করে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। প্রথম ধাপে ৫০ লক্ষ টাকা কালেকশনের উদ্দেশ্যে এদিন বিভাগের ১ম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা ৫ লক্ষ টাকা দান করে।
জাঁকজমকপূর্ণ ও উৎসব মুখর এই আয়োজনের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিএস অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফয়সাল হক। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ আর এম সোলাইমান এবং সিপিএস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপিএস বিভাগের ২০ বছর পূর্তি ও গ্র্যান্ড রিইউনিয়ন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মো. খালিদুজ্জামান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক
সিপিএস বিভাগের ২০ বছর পূর্তিতে বিভাগটির এই পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে এদিন ‘ফেরা’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। স্মরণিকায় বিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যের পাশাপাশি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, বিভাগ সম্পর্কে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মন্তব্য এবং সকল অ্যালামনাইদের পরিচিতি তুলে ধরা হয়।
এছাড়াও স্মরণিকায় বাণী দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, সিপিএস বিভাগের সভাপতি, অ্যালামনাই সভাপতি-সম্পাদক ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক।
রিইউনিয়ন আয়োজনের সঙ্গে জড়িত সকলকে অভিবাদন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, বর্তমান প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে অপরাধের কার্যকারণ নির্ণয়, অপরাধের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান, অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধে পুলিশিং শীর্ষক গবেষণায় ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের ইতিবাচক ভূমিকা বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক ও সকলের জন্য নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে একটি তাৎপর্যময় ভূমিকা রেখে চলছে।
এরই ধারাবাহিকতায় নীতি নির্ধারণী মহলের পাশাপাশি বিভাগটির প্রতি আমাদের প্রত্যাশাও সীমাহীন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটি জাতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় অপরাধী চক্র, ষড়যন্ত্রকারী এবং দুর্নীতিবাজরা। এদেরকে প্রতিহত করতে, আইনের মুখোমুখি করতে অপরাধবিজ্ঞান পাঠের বিকল্প নেই।
অ্যালামনাইদের উদ্দেশ্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির এ বিভাগ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীগণ তথা অ্যালামনাইগণ বাংলাদেশের সামষ্টিক উন্নয়ন ও অর্জনের ক্ষেত্রে গুরু দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ করে সাইবার ক্রাইম, মানি লন্ডারিং, হোয়াইট কলার ক্রাইম, দুর্নীতি প্রভৃতি গবেষণার ফলাফল নীতি নির্ধারণী মহলে ব্যাপকভাবে কাজে লাগছে।
অ্যালামনাইবৃন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে আরো বেশি সম্পৃক্ততা প্রত্যাশা করেন মহিবুল হাসান চেীধুরী। তিনি বলেন, এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার অবারিত সুযোগ গ্রহণ করছেনও তারা এবং বিদেশে বাংলাদেশের মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করছেন।
সিপিএস অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রকাশিত স্মরণিকা ‘ফেরা’
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, বিভাগটি যাত্রার পর থেকে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানাবিধ ঘটনাপ্রবাহ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেশের অপরাধ প্রতিকার ও প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বিভাগের ২০ বছরে পদার্পণ নিঃসন্দেহে গৌরবের ও আনন্দের। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক অগ্রগতিতে অ্যালামনাইদের ভূমিকা রয়েছে তাই এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
স্মরণিকায় দেওয়া বাণীতে সিপিএস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, বাংলাদেশে অপরাধ সম্পর্কে বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ, গবেষণা ও জ্ঞান অনুসন্ধান, অপরাধ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া উদ্ঘাটনের পাশাপাশি পুলিশ, আদালত ও কারা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সঠিক ও কার্যকরী ভূমিকা পালনের দিক নির্দেশনা দিতে বাংলাদেশের প্রথম বিভাগ হিসেবে মাভাবিপ্রবিতে ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশীদারিত্ব করে চলছে।
এই বিভাগের মেধাবী প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা দেশ, জাতি ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাস্তব ও বস্তুনিষ্ঠ অবদান রাখছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বে প্রাপ্ত শিক্ষার গুণমান সম্পর্কে আমি আত্মবিশ্বাসী। এই পুনর্মিলনের মাধ্যমে তারা এমন একটি বিভাগের অংশ হওয়ার গৌরব বহন করছে, যা শিক্ষা এবং অপরাধ সংক্রান্ত গবেষণার ভবিষ্যতকে সক্রিয়ভাবে গঠন করবে। আমরা শ্রেষ্ঠত্বের উত্তরাধিকার গড়ে তুলেছি এবং আমি অপরাধবিদ্যা এবং পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের জন্য অসীম সম্ভাবনার বিষয়ে যথেষ্ঠ আত্ম-প্রত্যয়ী।
ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ
প্রসঙ্গত, অপরাধ বিজ্ঞান, পুলিশ ও এ সংক্রান্ত বিষয়ে জ্ঞানার্জনের প্রয়োজনীয়তা তৃতীয় বিশ্বের দেশ বাংলাদেশেও রয়েছে ভেবে অপরাধতত্ত্ব ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগকে একাডেমিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২০০৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মাভাবিপ্রবির প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ শরীফ আহমেদ।
তবে দুর্ভাগ্যবশত প্রথম উপাচার্য হিসেবে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব শুরুর মাত্র সাত মাসের মাথায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মৃত্যুবরণ করলে সদ্য সৃষ্টি হওয়া বিভাগটির পথচলা কিছুটা থমকে যায়। এই ধাক্কার পরেও দীর্ঘ ২ দশক পেরিয়ে বিভাগটি আজ একটি শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সাফল্য ও গবেষণার মাধ্যমে, এমনটি মনে করেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এই বিভাগের পাঠ্যক্রমের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- অপরাধ বিজ্ঞান পরিচিতি, পুলিশ স্টাডিজ, ক্রাইম ম্যাপিং, ক্রিমিনাল সাইকোলজি, ইনভেস্টিগেশন, ফরেনসিক বিজ্ঞান, মেডিক্যাল জুরিসপ্রুডেন্স, সাইবার ক্রাইম, সন্ত্রাসবাদ, ক্রিমিনোলজিক্যাল রিসার্চ, মনোগ্রাফ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, পলিটিক্যাল সায়েন্স, বাংলাদেশ পুলিশ ও পুলিশ ব্যবস্থাপনা, আইন পরিচিতি, সাক্ষ্য আইন, দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি, মানবাধিকার, পেনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ইত্যাদি, যা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জানার কৌতূহল সৃষ্টি করে।
সিপিএস বিভাগের সব থেকে বিশেষত্ব ও আকর্ষণীয় দিক একাডেমিক পড়াশোনার অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রত্যেক বর্ষে একটি করে ফিন্ড ট্রিপের ব্যবস্থা। বাংলাদেশ পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ (সিআইডি), ঢাকাস্থ ফরেনসিক ল্যাব, সারদা পুলিশ একাডেমি, চট্টগ্রাম কোস্ট গার্ড, শিশু উন্নয়ন সংস্থা, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, বাংলাদেশ প্রিজন, পুলিশ স্টাফ কলেজসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থায় এসব ফিল্ড ভিজিট শিক্ষার্থীদের প্রবল কৌতূহলী করে তোলে সেই সাথে বাস্তবতা উপলব্ধি করে হাতে কলমে শেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে তদন্তের বিষয়গুলোও শেখানো হয়। যেমন-ক্রাইম সিন, আলামত সংগ্রহ, আলামত চিহ্নিতকরণ, সাইবার তদন্ত ছাড়াও বিভিন্ন তাত্ত্বিক ও টেকনিক্যাল বিষয়।
টাঙ্গাইলে অবস্থিত উচ্চশিক্ষালয়টির এই বিভাগ থেকে বিএসসি ও এমএসসি শেষ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৯ জন অত্র বিভাগের শিক্ষক হয়েছেন। শুধু তাই নয়, দেশে এই বিভাগের কার্যক্রম শুরুর এক দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগ নামে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ নামে। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ দুটির কোর্স কারিকুলামসহ যাবতীয় কার্যক্রম প্রণয়নে ভূমিকা রাখে মাভাবিপ্রবির সিপিএস বিভাগ। এমনকি চবি সিপিএসের ৫ জন শিক্ষক হলেন মাভাবিপ্রবি সিপিএসের সাবেক শিক্ষার্থী।
স্মরণিকায় উল্লিখিত বিভাগের অ্যালামনাইদের পরিচিতি থেকে জানা যায়, ইতিমধ্যেই এ বিভাগ থেকে অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করা ১৫টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে রয়েছেন ৬ জন, প্রশাসন ক্যাডারে ৪ জন, আনসার ক্যাডারে একজনসহ অন্যান্য ক্যাডারেও রয়েছেন বেশ কয়েকজন।
ক্যাডার ছাড়াও পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর (এসআই), দুদক, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ (এনএসআই) বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা রক্ষা সংক্রান্ত বাহিনীতে অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন অর্ধশতাধিক সাবেক শিক্ষার্থী। এছাড়াও ব্যাংক ও বিভিন্ন সরকারি চাকরির পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা, দেশের এনজিও ও কোম্পানিতে সিকিউরিটি এক্সপার্ট ও অফিসার হিসেবে সুনামের সাথে কর্মরত রয়েছেন এ বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী।
বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
জানা যায়, এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের অপরাধ বিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোতে ও অস্ট্রেলিয়ার স্বনামধন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এই বিভাগের অনেক শিক্ষার্থী ও বেশ কিছু শিক্ষক দেশের বাইরে উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ করছেন।