চুয়েটের অ্যাম্বুলেন্সে রোগীর সঙ্গে যাত্রীও!
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) পরিবহণ সেবা নিয়ে অসন্তোষ বেড়েই চলছে। চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বাস সেবা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বরাবরই অসন্তুষ্ট। এর মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স সেবার যাচ্ছেতাই ব্যবহার নিয়েও অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ডাক্তার দেখানোর জন্য বুকিং করা অ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহনের ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল (ইইই) বিভাগের বিদায়ী বর্ষের (১৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান চট্টগ্রাম শহরে ডাক্তার দেখানো জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে একটি অ্যাম্বুলেন্স বুকিং করে। বুকিং অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৮টায় মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে উঠলেও তার সাথে উঠে যায় আরো সাত জন যাদের কেউই ওই শিক্ষার্থীর পূর্বপরিচিত না।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে একটি পোস্ট করে। যে পোস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিয়ে তীব্র সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
অপরিচিত যাত্রী উঠানো নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক আল আমিনকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমি ইচ্ছেকৃতভাবে কাউকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলিনি। দুজন বাস চালক উঠে গেছেন। তাদেরকে আমি আর নিষেধ করতে পারিনি। আর ডা. মো. আব্দুল্লাহ উঠেছিলেন এবং তিনি সাথে মেডিকেল সেন্টারের এক কর্মচারীকে তার পরিবার নিয়ে উঠাতে দিয়েছেন। আমি ডাক্তারের আদেশ মানতে বাধ্য তাই তাদেরকে নিষেধ করিনি।
ডা. মো. আব্দুল্লাহ কেন নিজে এবং আরো একটা পরিবারকে অনুমতি ব্যতীত এ্যাম্বুলেন্সে উঠালেন এবিষয়ে জানতে বারবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। একই সাথে মেডিকেল সেন্টারের চিফ মেডিকেল অফিসার ড. রানী আকতারের সাথেও মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, নিয়মানুযায়ী আমাকে অ্যাম্বুলেন্স চালক হাসপাতালে নিয়ে যাবেন এবং ক্যাম্পাসে নিয়ে আসবেন। কিন্তু, আমাকে পথেই নামিয়ে দেয় এবং বাকি যাত্রীদের ঠিকঠাক গন্তব্যে নিয়ে যায়। আমার নামে বুকিং করা অ্যাম্বুলেন্সে যেখানে শুধু আমারই ওঠার কথা ছিল সেখানে আমাকে ক্যাম্পাসে নিয়েও আসেনি। এরকম ঘটনা চুয়েটে হরহামেশাই হচ্ছে। আমি জড়িতদের শাস্তির দাবি করছি।
এ বিষয়ে যানবাহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাম্বুলেন্সে যাত্রী পরিবহণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কারো একান্তই জরুরি প্রয়োজনে গাড়ির দরকার হয় তবে যানবাহন শাখার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। আমি উক্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য উক্ত চিকিৎসক এবং চালক উভয়ের সাথেই কথা বলবো।
মেডিকেল সেন্টারের সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর। উক্ত ঘটনা বিষয়ে দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে যোগাযোগ করেছি। তাকে ই-মেইলে অভিযোগ জানানোর জন্য বলেছি। তার অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।