বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে বুয়েটের দুই শিক্ষার্থী মারা গেছেন
রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ আগুনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন ও লামিশা ইসলাম মারা গেছেন। নাহিয়ান আমিন বিশ্ববিদ্যালয়টির ইইই বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী। আর লামিসা ইসলাম একই ব্যাচের মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী।
নাহিয়ানের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তার বন্ধু জুনায়েদ বলেন, নাহিয়ান একবার আমাকে বলেছিল, এখানে থাকলে একদিন হয় রোড এক্সিডেন্টে মারা যাব, না হলে আগুনে পুড়ে। এত দ্রুত নাহিয়ানের কথা সত্যি হয়ে যাবে কল্পনাও করতে পারিনি।
আরেক বন্ধু তৌসিফ জানান, বরিশাল জিলা স্কুলের সাবেক ছাত্র নাহিয়ানের সঙ্গে আগামীতে অনেক আড্ডা ও গেট টুগেদারের পরিকল্পনা ছিল তাদের। সব কিছু অকল্পনীয়ভাবে এক নিমিষে শেষ হয়ে গেল।
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফায়াজ লিখেছেন, বেইলি রোডের আগুন বুয়েট ২২ ব্যাচের দুইজন মারা গেছেন। একজন নাহিয়ান আমিন ইইই’২২ এর, অপরজন লামিশা ইসলাম মেকানিকাল’২২ এর সিআর। মাত্র ৪ মাস আগে তাদের ক্লাস শুরু হয়েছে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, মৃত্যুর ১৯ ঘণ্টা আগেও ফেসবুকে ২৯ ফেব্রুয়ারি লিপ ইয়ায়ের দিনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে নাহিয়ান লিখেছিল, হয়ত চার বছর পর আবার ২৯ ফেব্রুয়ারির এমন একটা দিনের দিকে ফিরে তাকাব।
নাহিয়ানের দেয়া শেষ পোস্টটির স্ক্রিনশট ইতোমধ্যে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। নাহিয়ানের বন্ধুবান্ধবদের অনেকে জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় লামিশা ইসলাম নামে আরেকজন বুয়েটের শিক্ষার্থী ওই বিল্ডিংয়ে ছিলেন। তিনিও মারা গেছেন।
আগুন লাগার পর তার বোনকে খুঁজতে আসা সাফায়েত নামের এক ব্যক্তি বলেন, তাঁর বোনের নাম লামিশা, সে বুয়েটের শিক্ষার্থী। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় রেস্টুরেন্টে খেতে এসেছিল। তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান তারা। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৯টা ৫৬ মিনিটে। পরে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লে আরও ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ, আনসার, র্যাব ও এনএসআই। ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে।