২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৯

সাবেক উপাচার্যের পদক্ষেপে ভুগছেন বশেমুরবিপ্রবি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

উপাচার্য গিয়ে উপাচার্য এসেছেন। কিন্তু সমাধান হয়নি সমস্যার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম সংকটের কথা বলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খন্দকার নাসিরুদ্দিন দখলে নেন বিশ্ববিদ্যালয়স্থ স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল ভবন। সাবেক এ উপাচার্যের বিদায় হলেও তার এমন পদক্ষেপে লেগে থাকা সমস্যা নিয়ে ভুগছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘুরে দেখা গেছে, বেহাল দশায় চলছে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অধীন বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ। সংস্কার কাজের ময়লার স্তূপে এবং ড্রেনেজের অব্যবস্থাপনার কারণে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে বিদ্যালয়টির প্রাঙ্গণ। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ক্লাসরুম সংকট তো রয়েছেই।

এসব সমস্যার প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। তবে সংকট ও সমস্যা সমাধানে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যায়নি। বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক  ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব জানিয়েছেন, এ সমস্যা সমাধানে আরও সময় লাগবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু যাত্রা শুরুর ৪-৫ মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম সংকট দেখিয়ে তৎকালীন উপাচার্য খন্দকার নাসিরুদ্দিন প্রতিষ্ঠানটির মূল ভবন (বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশের টিনসেড ভবন) থেকে সরিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের পাশে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তর করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারের ময়লা রাখার কারণে ময়লা স্তুপের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণটি।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাগুলোর সমাধান চেয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের। একদিকে বিদ্যালয়টির অভ্যান্তরণে ক্লাসরুম সংকট অন্যদিকে নতুন করে যোগ হওয়া ময়লার সমস্যায় নাজেহাল অবস্থা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। তাই তারা সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয়ের মূল ভবনে ফেরার দাবি জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক শিক্ষক জানান, আমাদের বরাদ্দকৃত স্কুল ভবন শেখ ফজলে নাঈম উদ্বোধন করেছেন। সাবেক উপাচার্য খন্দকার নাসিরউদ্দীন জায়গাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে নিয়েছিলেন। পরে ভিসি বাংলোর পাশে আমাদের জায়গা দেন। আমরা বর্তমানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করছি। এক্ষেত্রে ১০-১২টা ক্লাস রুম থাকা দরকার। কিন্তু ক্লাস রুম সংকটের কারণে একই রুমে দুটি ক্লাস করানো লাগছে।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের জন্য শ্রমিকরা দুটি ওয়াশরুমের একটি ব্যবহার করছে। একইসঙ্গে ময়লা-আর্বজনা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করছে বিদ্যালয়টির বর্তমান পরিবেশকে। এমতাবস্থায় লটারির মাধ্যমে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীরা স্কুল এন্ড কলেজের পরিবেশ দেখে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। বারবার আশ্বাস দেওয়ার পরেও প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এজন্য আমাদের দাবি মূল নকশা অনুযায়ী মূল ভবন ফেরত দিতে হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক  ড. এ. কিউ. এম. মাহবুব বলেন, ওই জায়গা ওদের দেয়া যাবে না। আমি আমার শিক্ষার্থীদেরই দিতে পারছি না। আর রিজেন্ট বোর্ড থেকে এই স্কুলের অনুমোদন নেই। এমনকি স্কুলের একজন শিক্ষকেরও নিবন্ধন নাই। তবুও আমি রাখছি কারণ শিক্ষকদের রুটি-রুজির ব্যাপার। আর কিছু শিক্ষার্থীও আছে। এটা ঠিক হতে আরও ৫-৭ বছর সময় লাগবে। এদের অনুমোদন আসবে, বাজেট আসবে তারপর এবং নামটাও পরিবর্তন করতে হবে।

ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শহীদ মিনারের কর্মসূচি নিয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য বলেন ,এরা শহীদ মিনারে গেছে সিনক্রিয়েটের জন্য। এরা আমার কাছে আসলেই সমাধান হয়ে যায়। আমার কাছে তো কখনো আসে নাই। একটা কিছু হলেই শহীদ মিনারে দাঁড়ায় যায়। মনে হয় ভিসিই সব কিছু করছে! কিন্তু এটা তো কাম্য নয়।