বসন্তের প্রথমদিন সাদামাটা চুয়েট, শিক্ষার্থীদের ছিল না আমেজ
বাংলাদেশে ছয় ঋতুর মধ্যে অন্যতম হলো বসন্ত। বাংলা সন হিসেবে ফাল্গুন ও চৈত্রমাস মিলে এ ঋতু। নানা সৌন্দর্য ও মনোমুগ্ধকর বিষয়ের জন্য বসন্তকে বলা হয় ঋতুর রাজা। আর এ ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করতে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিনোদন কেন্দ্র থেকে শুরু করে আনাচেকানাচে বয় উৎসবের মেলা। যেখানে বসন্ত বরণ উৎসবের আয়োজন করা হয় মহাসমারোহে।
প্রতিবছরের ন্যায় এইবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। বসন্তের দূত কোকিলের কুহুতান, মাতাল দখিন হাওয়া, ফুল-ফলের রঙিন ডালি, বাসন্তী সাজে বসন্ত বরণ। এ নিয়ে দেখা যায় প্রাণচাঞ্চল্য।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি, ০১ ফাল্গুন) ছিলো বসন্তের শুরুর দিন। প্রকৃতির রঙে সেজে বসন্তবরণ উৎসবের আয়োজন হয় দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে, বিনোদন কেন্দ্রে। তরুণীরা হলুদ আর বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে, খোঁপায় ফুল গুঁজে এবং তরুণরা হলুদ পাঞ্জাবি পরে অংশ নেয় বসন্ত উৎসবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে আনন্দ হিল্লোল ছড়িয়ে পড়ে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাসমারোহ ও বহু-বর্ণিল সাজে শুরু হয়েছিল বসন্তের বরণ। সবাই মেতেছে বসন্ত আমেজে। নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বসন্তবরণ করা হয়।
তবে এ বছর চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) বসন্ত উৎসব উপলক্ষ্যে চোখে পড়ার মতো ছিল না কোনো আয়োজন। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে বসন্তবরণ উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আয়োজন করা হয়নি।
তবে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে চুয়েট ক্লাব প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বসন্ত বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের এ আয়োজন ছিলো সীমাবদ্ধ। এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করে শুধু ক্লাব সংশ্লিষ্ট সকল পরিবার। এতে শিক্ষার্থীদের তেমন অংশগ্রহণ ছিল না।
চুয়েট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আয়োজন হয়ে থাকে, এটা একটা ভালো বিষয়। চুয়েট ক্লাব শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে এ আয়োজন করেছে। তবে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর ও হল প্রভোস্টদের সহযোগিতায় কেন্দ্রীয়ভাবে বড় পরিসরে আয়োজন করা হলে শিক্ষার্থীও এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেতেন।
চুয়েটের সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনির সভাপতি ফারহান আনিস বলেন, আমরা সম্প্রতি হিম উৎসব করেছি। বসন্ত বরণ উপলক্ষ্যে আমরা কাজ করছি, আমাদের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও বানানো হবে।
বসন্তের প্রথম দিন সাদামাটা কাটলেও উৎসব নিয়ে সুখবর দিয়েছেন চুয়েট ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মেহজাবিন ইসলাম ইলমা। তিনি বলেন, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি (রোববার) বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত বরণ উৎসব ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করা হবে। যেখানে উন্মুক্ত মেলা ও বিভিন্ন আকর্ষণীয় নানা আয়োজন থাকবে শিক্ষার্থীদের জন্য।
কেন্দ্রীয়ভাবে বসন্ত বরণ ও উৎসব আয়োজন করা নিয়ে চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা এমন একটি আয়োজন করতে পারি, যেখানে শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলেই অংশ নিয়ে উপভোগ করতে পারেন ৷ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর বিষয়টি ভেবে দেখবে।