কনসার্ট চলাকালে স্থাপত্য বিভাগে ভাঙচুর, বহিরাগতদের কাজ বলছেন শিক্ষার্থীরা
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) অ্যাকাডেমিক ভবনে স্থাপত্য বিভাগের আসবাবপত্র ও শিক্ষার্থীদের তৈরীকৃত বিভিন্ন মডেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কনসার্ট চলাকালে কনসার্ট চলাকালে ঘটনা ঘটে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আয়োজিত একটি কনসার্টে উচ্চশিক্ষালয়টির শিক্ষার্থী নন এমন ব্যক্তিদের উপস্থিতি ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থাপত্য বিভাগের সামনে রাখা শিক্ষার্থীদের বানানো বিভিন্ন মডেল টেবিলের উপর থেকে মেঝেতে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং বিভিন্ন শিল্পকর্ম ও আসবাবপত্রের বিভিন্ন অংশ ভাঙ্গা হয়েছে। স্থাপত্য বিভাগের বিভিন্ন শিল্পকর্ম ও আসবাবপত্রের বিভিন্ন ভাঙ্গা অংশ মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলছেন, গতকাল রাতে অ্যাকাডেমিক ভবনের মধ্যে কনসার্ট থাকায় বহিরাগত অনেক মানুষকে আসতে দেখেছিলাম। তারা বিভিন্ন বিভাগের সামনে ঘোরাফেরা করছিল। আমরা মনে করি এই ধরনের কাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করতে পারে না। এটা বহিরাগত কারোর মাধ্যমেই সংঘটিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে স্থাপত্য বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, গতকাল আমরা ক্লাস শেষে যখন বাসায় যাই তখন আমরা সব কিছু ঠিকঠাক দেখে গিয়েছিলাম। সকালে এসে আমরা দেখি রাতের মধ্যে এই অবস্থা করা হয়েছে। কে বা কারা করেছে এটা জানি না, তবে যারা এটা করেছে কাজটা ভালো করেনি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে বশেমুরবিপ্রবি ভিসির কুশপুত্তলিকা দাহ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের
ভাঙচুরের বিষয়ে স্থাপত্য বিভাগের সভাপতি ড. সালেহ আহমেদ বলেন, অ্যাকাডেমিক ভবনের কাজ হলো—অ্যাকাডেমিক যে-সব ইভেন্ট আছে সেগুলো আয়োজন করা। এরকম একটি অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং এর মাঝখানে মঞ্চ থাকা, লাউডস্পিকার রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলমান থাকা এবং বিভিন্ন বিভাগের করিডোরে শিক্ষার্থীদের অবস্থান করতে দেওয়া আমার মনে হয় শিক্ষার্থীরা কোনো ভাবেই পারে না বলেও মনে করেন তিনি।
‘একটা অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং এর মঞ্চের সাউন্ড সিস্টেমের লাউডনেস কতটুকু হতে পারে, তার ব্যাপ্তি কতটুকু হতে পারে এবং এক বছরে সর্বোচ্চ কয়টি প্রোগ্রাম হতে পারে সেটাও নির্ধারণ করে দিতে হবে। তা না হলে এভাবে যদি দিনের পর দিন প্রোগ্রাম চলতে থাকে, আমাদের কারও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালানো সম্ভব না’—জানান ড. সালেহ আহমেদ।
তিনি বলেন, একটা মডেল প্রসেস করতে দিনের পর দিন রাতের পর রাত কাজ করতে হয়। এই ঘটনায় আমি আর্কিটেকচার বিভাগের সভাপতি হিসেবে ক্ষুব্ধ এবং প্রশাসনকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে এমন পরিস্থিতি আর তৈরি না হয়। মডেলগুলো শিক্ষার্থীদের টাকায় তৈরি, আমরা এর ক্ষতিপূরণ আমরা চাই।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমি এই বিষয়ে ভালোভাবে অবগত না, তাই কিছু বলতে পারছি না। তবে বিষয়টি নিয়ে দ্রুতই বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।