বছর পেরিয়ে যায়, সমস্যা-সঙ্কট থেকে যায় রাবিপ্রবি ক্যাফেটেরিয়ার
গেল বছরের মাঝামাঝিতে অনেকটা ঘটা করে উদ্বোধন করা হয় রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবিপ্রবি) ক্যাফেটেরিয়া। উদ্বোধনের এক বছর পার হলেও ক্যাফেটেরিয়াটি এখনো নানান সঙ্কটে জর্জরিত। ক্যাফেটেরিয়া উদ্বোধনের পর সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমধানের আশ্বাস থাকলেও তা কার্যকর হয়নি।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাফেটেরিয়ায় খাবারের দাম অনেকটাই বেশি। কিন্তু সে তুলনায় খাবারের পরিমাণ বাইরের তুলনায় অনেক কম। পাশাপাশি শিক্ষার্থীবান্ধব বসার সুন্দর পরিবেশ দিতে পুরো ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত দামের কারণে প্রয়োজনের তুলনায় অল্প খাবার কিনেই ক্ষান্ত থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে আমরা ক্যাফেটেরিয়ার কাজে অগ্রসর হতে পারিনি। এখন আমরা খুব দ্রুতই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। -উপাচার্য
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের জন্য বাঁশের তৈরি টং ও টেবিল-চেয়ারে অস্থায়ী বসার ব্যবস্থা থাকলেও তা ছিল অপর্যাপ্ত। সেসব অস্থায়ী বসার জায়গা সময়ের সাথে সাথে বৃষ্টিতে ভিজে, ঘুণে ধরে ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়ছে।
এছাড়া বর্তমানে সেসব অস্থায়ী স্থাপনা ব্যবহারের ফলে যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। শিক্ষার্থীরা এখন দাঁড়িয়ে, খোলা আকাশের নিচেই খাবার গ্রহণ করছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা খাবার দাম। এখানে খাবারের দাম নির্ধারণের কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। দাম নির্ধারণের জন্য যে কমিটিকে কাজ করতে বলা হয়েছিল তারাও এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও এর দায় নিতে চান না। এতে শিক্ষার্থীরা ক্যাফেটেরিয়ার সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাফেটেরিয়ায় যান না শিক্ষকরা, বাধ্য হয়ে খান শিক্ষার্থীরা
এছাড়া ক্যাফেটেরিয়া অঞ্চলে পর্যাপ্ত ডাস্টবিনের ব্যবস্থা নেই। নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সুযোগ না থাকায় খাবারের প্যাকেট, উচ্ছিষ্ট অংশ ছড়িয়ে পড়ছে কাপ্তাই লেকে। এতে করে দূষন হচ্ছে লেকের পানি। নষ্ট হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্যও।
ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষ বলছে, দাম নির্ধারণের বিষয়ে এখনো প্রশাসনের কাছে থেকে কোন ধরনের আলোচনার ডাক পাননি তারা। এজন্য তারা তাদের মতো করে ব্যবসা চালিয়ে নিচ্ছেন।
জানা গেছে, ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মূল্য নির্ধারণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের খাবারের স্থায়ী বসার জায়গাসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে একটি মিটিং ডেকে আলোচনার কথা থাকলেও সে সভাটিও আয়োজন করা সম্ভব হয়নি।
ক্যাফেটেরিয়ার সবচেয়ে বড় সমস্যা খাবার দাম। এখানে খাবারের দাম নির্ধারণের কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না। -শিক্ষার্থী
এর আগে ২০১৯ সালে ক্যাফেটেরিয়াটি স্থাপনের পর ২০২০ সালে উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, মালিকা হস্তান্তরসহ নানা জটিলতায় উদ্বোধন হলেও ক্যাফেটেরিয়ার কার্যক্রম শুরু করা যায়নি। এরপর ২০২২ সালে ২২ আগস্ট ক্যাফেটেরিয়াটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। তবে থেকে যায় সমস্যা-সঙ্কট।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সেলিনা আখতার বলেন, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে আমরা ক্যাফেটেরিয়ার কাজে অগ্রসর হতে পারিনি। ক্যাফেটেরিয়া শিক্ষার্থীদের অধিকার। এখন আমরা খুব দ্রুতই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। স্থায়ী সমাধানের মাধ্যমে যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবো।