এক যুগ অচল দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্র
এক যুগেও সচল করা যায়নি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) স্থাপিত ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র সিসমোগ্রাফ। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয়কারী একমাত্র যন্ত্রটি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অচল রয়েছে। ফলে শনিবার সকাল ৯টা ৩৫মিনিটে ভূমিকম্প হলেও তার মাত্রা এর মাধ্যমে জানা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গে সম্পাদিত একটি চুক্তির আওতায় দেশের পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং দুটি জেলা শহরে স্থায়ীভাবে সিসমোগ্রাফি যন্ত্র স্থাপন করা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আক্তার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১০ সালের অক্টোবরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের তত্ত্বাবধানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যন্ত্রটি স্থাপিত হওয়ার পর মাত্র দুটি ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয় করা সম্ভব হয়। ২০১১ সালের জানুয়ারিতে যন্ত্রটিতে সমস্যা দেখা দিলে একাডেমিক ভবনে আন্ডারগ্রাউন্ড চেম্বারের সঙ্গে ইন্টারনেটের পূর্ণাঙ্গ সংযোগসহ ভূকম্পন পরিমাপক যন্ত্রটি চালু করা হয়।
কিন্তু চালুর এক বছর না যেতেই আবারও নষ্ট হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূকম্পনের ফলে প্রাইমারি, সেকেন্ডারি, সার্ফেস এবং রিলে ওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে। চারটি ওয়েভ একসঙ্গে বের হলেও প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি ওয়েভ ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। সার্ফেস এবং রিলে ওয়েভ পাওয়ার এক-দুই মিনিট আগে এ সতর্কবার্তা পাওয়া সম্ভব।
যদি ২৪ ঘণ্টা এ যন্ত্র মনিটর করা হয় তাহলে জনগণকে ভূমিকম্প সম্পর্কে অবহিত করার পাশাপাশি জানমালের ক্ষতি অনেক কমানো সম্ভব হবে। এ ছাড়া এ যন্ত্রের অংশবিশেষ (প্লেট) মাটির নিচে থাকে। এ প্লেটের সাহায্যে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ভূমির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। অর্থাৎ ভূমির অবস্থান ওপরে উঠছে, নাকি নিচে নামছে- তা পর্যবেক্ষণ করা হয়।
আরো পড়ুন: ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রীর ‘আত্মহত্যার’ স্ট্যাটাস
সিসমোগ্রাফ যন্ত্রটির অপারেটিংয়ের দায়িত্বে থাকা পবিপ্রবির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুনীবুর রহমান শিক্ষা ছুটিতে জার্মানিতে রয়েছেন।
একই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম তাওহীদুল ইসলাম বলেন, এটি অতি পুরোনো একটি অ্যানালগ যন্ত্র। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডিজিটাল যন্ত্র বের হয়েছে। সিসমোগ্রাফটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রজেক্টের আওতাধীন। তাই এ মেশিনের কার্যকারিতা কতটুকু, এ ব্যাপারে তারা ভালো বলতে পারবেন।