যবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারে দেখা মেলে না ডাক্তারের

ডা: এম আর খান মেডিকেল সেন্টার
ডা: এম আর খান মেডিকেল সেন্টার  © টিডিসি ফটো

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ডা: এম আর খান মেডিকেল সেন্টারে সময়মত বসেনা ডাক্তার, এক্সরে ও প্যাথলজিতে থাকেনা কর্তব্যরতরাও। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে ঔষধ সংকটসহ নানা অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিকেল সেন্টারের বিরুদ্ধে। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সময়ে গিয়েও ডাক্তার ও এক্সরে টেকনিশিয়ানের দেখা মেলেনা মেডিকেল সেন্টারে। মাঝে মাঝে ডাক্তারদের করা প্রেসক্রিপশনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ঔষধও মেলে না। গত ১৬ অক্টোবর (সোমবার) যবিপ্রবির আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ গুরুতর আহত হয়ে যবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক্সরে করার পরামর্শ দেয় ও তৎক্ষনাৎ এক্সরের কক্ষে গেলেও দেড় ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও এক্সরে টেকনিশিয়ান হাবিবুর রহমানকে না পেয়ে পরবর্তীতে যশোর শহরে নেওয়া হয় ঐ শিক্ষার্থীকে। এবিষয়ে পিএমই বিভাগের চেয়ারম্যান ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগী ঐ শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা জানায়, খেলার দ্বিতীয়ার্ধে শাকিলের ডান পায়ে আঘাত লাগলে প্রাথমিক চিকিৎসক দল জানাই তাঁর ডান পায়ে ফ্রাকচার হয়েছে। তৎক্ষণাত মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে গেলে এক্স-রে করতে গেলে আমরা রুম তালাবদ্ধ পাই, সাথে কোনো স্বাস্থ্যকর্মীকেও পায় নাই। তারপর জানতে চাওয়া হলে বলে, এক্সরে টেকনিশিয়ান খেলা দেখতে গেছে মাঠে। ঐ মূহুর্তে আমাদের ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়।

আরও পড়ুন: নিয়োগ-পদোন্নতি জটিলতায় স্থবিরতা খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে

এদিকে ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী জানায়, প্রচন্ড অসুস্থতা নিয়ে এক ঘন্টা তেরো মিনিট অপেক্ষা করার পর ডাক্তার আসে অফিসে। মনে হয়েছে ঐ সময়ে আমি অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে আসতে পারতাম। একই সময়ে আমার সামনে আরেকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে আসে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায়, সেও আমার মতো অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সময়ে চিকিৎসক না পেলে মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার রেখে কি লাভ আমাদের? দু-এক ঘন্টা অপেক্ষা করে যদি ডাক্তারের দেখা মেলে তবে ঐ সময়ে আমি যশোর শহর থেকে জরুরি সেবা নিতে পারি। কর্তৃপক্ষকে বলবো উনারা যেনো মেডিকেল সেন্টারের প্রতি সুদৃষ্টি দেন ও সকল ঔষধের প্রাপ্যতার ব্যবস্থা করেন।

সঠিক সময়ে অফিসে না আসার বিষয়ে হাসপাতালটির ডা. মোছা. মাসুমা নূরজাহানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

এদিকে ডা. রুদ্র প্রসাদ বিশ্বাস বলেন, ডাক্তার পাওয়া না যাওয়ার যে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে সেটি মূলত কোন ডাক্তার সবসময় না হলেও মাঝেমধ্যে দেরি করে আসেন অথবা তিনি দুপুরের খাবারের বিরতিতে থাকেন। এছাড়া মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকার কারণে অনেক সময় রোগী আসলেও ডাক্তারদের পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারের প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা ডা: দীপক কুমার মন্ডল বলেন, আমার চাকরি জীবনের সবসময় আমি অফিস টাইম মেইনটেইন করি। সোমবার আমার এলাকার একজন শিক্ষক গুরুতর আহত হওয়ায় ঐদিন সকালে রেজিস্ট্রার মহোদয় থেকে মুঠোফোনে ছুটি নেয়। পিএমই বিভাগের শিক্ষার্থী আহত হয়ে মেডিকেল সেন্টারে আসলে এক্সরে টেকনিশিয়ান না পাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে এক্সরে টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। চিকিৎসকদের সঠিক সময়ে অফিস করার নির্দেশনা দিয়ে আগস্ট মাসে নোটিশ করেছি। চিকিৎসকগণ কেনো সঠিক সময়ে আসে না সে বিষয়ে আমার অবস্থান আরো কঠোর করবো। প্যাথলজি বিভাগের কর্মচারীর অন্য জায়গায় চাকরী হওয়ায় ঐ জায়গার লোকবল সংকট হয়েছে, আমরা শীঘ্রই প্যাথলজিতে লোক নিয়োগ করবো। আর আমাদের মেডিকেল সেন্টারে ঔষধের কোনো ঘাটতি নেই। খুব শীঘ্রই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য রাত্রিকালীন জরুরি সেবা চালু করবো।


সর্বশেষ সংবাদ