মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতৃত্ব গঠনে ক্লিন ইমেজকে গুরুত্ব দেয়া হবে
২৪ সেপ্টেম্বর মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মিসভা সফল করে পদপ্রত্যাশীদের সিভি সংগ্রহ পূর্বক নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে ইতিবাচক অভিমত ব্যক্ত করে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের কর্মিসভা বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়কদের একজন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ফুয়াদ হাসান বলেছেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক যেমন ক্লিন ইমেজের, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কমিটিও তারা ক্লিন ইমেজ বিবেচনা করে বেছে বেছে দিয়েছেন যা ছাত্রদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে। তাই ক্লিন ইমেজকে অবশ্যই গুরুত্ব দেয়া হবে।
তিনি বলেন, লোকালিজম নয় বরং যোগ্যতা বিবেচনায় মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দেয়া হবে। যাদের ছাত্রত্ব আছে, যারা রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ক্যাম্পাসে রাজনীতি করছে এবং যারা যোগ্য তাদেরকেই আমরা নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করবো।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, আশা করছি মাভাবিপ্রবির কর্মিসভা অনেক উৎসবমুখরভাবে হবে। মাভাবিপ্রবির যেহেতু দীর্ঘ সময় ধরে কমিটি নেয়, আমরা ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মেনে কর্মিসভার মাধ্যমে সিভি নিয়ে দ্রুত কমিটি দেয়ার চেষ্টা করবো। আমরা ইতোমধ্যে প্রার্থীদের নিয়ে ঢাবি মধুর ক্যান্টিনে একটি প্রস্তুতি সভা করেছি। আশা করছি তারা একতাবদ্ধ থেকে একটি সুন্দর প্রোগ্রাম উপহার দিবে।
মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির প্রায় দুই বছর পর কর্মিসভার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ফলে মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব আসবে বলে আশাবাদী পদপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীরা।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মিসভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের কর্মিসভা আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ছয়জন কেন্দ্রীয় নেতাকে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সমন্বয়ক ৬ জন হলেন- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি সাইফুল্লা আব্বাছী অনন্ত ও মো. ফুয়াদ হাসান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হক শিশির, সাংগঠনিক সম্পাদক সিয়াম রহমান, উপ-নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক মো. হাবিবুল বাশার এবং সদস্য জেবুন্নাহার শিলা।
আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের এই কর্মিসভা আয়োজনের প্রেক্ষিতে নতুন কমিটি পাবার আশা পদপ্রত্যাশীদের। তবে এর আগে ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় তিন নেতাকে মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরপর ওই বছরের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইএসআরএম বিভাগের সেমিনার কক্ষে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত (সিভি) গ্রহণ করেন মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত তৎকালীন কেন্দ্রীয় দুই নেতা, সহ-সম্পাদক সোহরাব হোসেন শাকিল এবং সহ-সম্পাদক শেখ আরজু।
কমিটি বিলুপ্তি এবং জীবন বৃত্তান্ত জমা নেওয়ার ঘটনার প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময় পেরিয়ে গেছে। এরই মধ্যে পরিবর্তন হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব। দীর্ঘ সময় ধরে কমিটি না থাকায় পরিপূর্ণভাবে সাংগঠনিক কাজ করতে এবং কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাংগঠনিক ধারা পুরোপুরিভাবে অব্যাহত রাখতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগকে।
এক বছরের কমিটি বিলুপ্তিও করা হয় চার বছর পর। মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের প্রথমবারের মতো কমিটি হয় ২০১৭ সালের ৯ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সজীব তালুকদারকে সভাপতি ও সাইদুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। পরের বছর ৪ মে মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের ১৮৮ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
তবে ওই বছরই নানা অভিযোগে মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে বহিষ্কারের দাবি করে ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতা ও কর্মীরা। পরে দলীয় অন্তর্কোন্দল ও নানা অভিযোগে প্রথমে সভাপতি এবং পরে সাধারণ সম্পাদককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মূল নেতৃত্বের বাইরে দীর্ঘদিন সংগঠন পরিচালনা এবং কমিটি বিলুপ্তির পর দীর্ঘদিন আনুষ্ঠানিক নেতৃত্বের ঘাটতির কারণে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ছাত্ররাজনীতি এবং সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি ব্যাহত হয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে আশা রাখছে মাভাবিপ্রবি ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীরা।
সার্বিক বিষয়ে কথা বলেছেন মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিবিড় পাল।তিনি বলেন, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর কর্মিসভা সফল করতে সকল প্রস্তুতি চলমান রয়েছে এবং এ দিন ছয়জন সমন্বয়কবৃন্দের পাশাপাশি আরও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
দীর্ঘ ছয় বছর সাংগঠনিক কার্যক্রমের ব্যাপারে তিনি বলেন, সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক চলে যাওয়ার পরে সময়টা অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিল। ক্যাম্পাসে আমি সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছিলাম। আমাদের টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক অভিভাবকদের সহযোগিতায় এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দিকনির্দেশনায় আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রণ করেছি। এছাড়া মাননীয় উপাচার্য ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমরা কমিটিটা রান করার চেষ্টা করেছিলাম। এর আগে জয় ভাই ও লেখকদার নির্দেশে কর্মিসভায় সিভি নেওয়া হয়েছিল কিন্তু কোনো কারণে কমিটিটা হয়নি। তবে আমরা এইবার আশা রাখছি যে সাদ্দাম ও ইনান ভাইয়ের হাত ধরে নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছি। নেতৃত্বে যেই আসুক সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করবে বলে আশা করছি।