রুয়েট ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে আলোচনায় যারা
প্রায় ৭ বছর পর নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের ৪র্থ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর। পদ-প্রত্যাশী নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নেতৃত্বে আসতে স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে। ক্যাম্পাসে নিয়মিত শোডাউনও দিচ্ছেন। নেতৃত্বে আসতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কিছু পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতার নাম এরই মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে।
রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে স্বচ্ছ ইমেজধারী, সৎ, যোগ্য এবং নেতৃত্বদানে ক্ষমতাসম্পন্ন পদপ্রত্যাশীদের দায়িত্ব দেওয়া হবে, নাকি অর্থের বিনিময়ে নেতৃত্বে আসবে তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সবকিছু ছাপিয়ে রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন নেতৃত্বে আসার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সৌমিক সাহা। তিনি কম্পিউটার কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাসা ফরিদপুর সদর উপজেলায়। তিনি ক্যাম্পাসে শুরু থেকেই ছাত্রলীগের সাথে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা গেছে।
এছাড়াও এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির উপ-গ্রন্থনা ও প্রকশনা সম্পাদক মো. ছালাতিজ্জোহা ইফতি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি বোয়ালিয়া রাজশাহী। সহ-সভাপতি মো. ফাহমিদ লতিফ (লিয়ন)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বা[ড়ি নীলফামারীতে।
তবে মনোনয়ন দৌড়ে আরও একাধিক নেতাকর্মী এগিয়ে থাকলেও রাজনীতিতে দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন না। কমিটির তারিখ ঘোষণার পর থেকে সক্রিয় হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে পরিবারিক সমস্যার কারণে সক্রিয় থাকতে পারেননি বলে তারা দাবি করছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি এম. এম. ওসমান হায়দার (তমাল)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। উপ-দপ্তর সম্পাদক লাশিউর রহমান (নাহিদ)। তার বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায়। এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন আরও অনেকেই।
তবে এসব পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হয়েছে এবং অনেকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই শাখায় সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে স্বোচ্চার থাকবেন এমন নেতৃত্ব চান শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্থানীয় ও বাইরের যোগ্য পদপ্রত্যাশীদের সম্মিলিত নেতৃত্ব দেখতে চান তারা।
রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র কল্যাণের পরিচালক রবিউল আউয়াল বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে পাশে নিয়ে রুয়েট ক্যাম্পাসে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার মতো যাদের যোগ্যতা রয়েছে তাদের হাতেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত।
কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন এ বিষয়ে কথা হয় রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান নিবিরের সাথে। তিনি বলেন, রাজশাহীতে একসময় শিবিরের আস্তানা ছিল। এখনো কিছুটা প্রভাব রয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাদেরকে দমন করে ও বঙ্গবন্ধুকে আদর্শকে লালন করে যারা রাজনীতি করে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে ভূমিকা রাখবে এমন নেতাই নেতৃত্বে আসা দরকার।
রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোহা. ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, আলোচনায় যারাই থাকুক না কেন রুয়েট ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে তাদেরই আসা উচিত যারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবে। একটি স্মার্ট ছাত্রলীগের ম্যান্ডেট নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে। তবে পরিচ্ছন্ন ইমেজ এবং সততা থাকতে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে এদেশের যুবসমাজকে নিয়ে সামনের জাতীয় নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে বিজয়ী করে নিয়ে আসার যোগ্যতা যাদের থাকবে তাদেরকেই নেতৃত্বে আনা উচিত।
তবে স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে এমন যোগ্য নেতাকর্মীরাই শীর্ষপদের জন্য বিবেচিত হবে জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের কাছে যারা গ্রহণযোগ্য; শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য যাদের দক্ষতা, ব্যক্তিত্ব ও স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে এবং যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আপসহীন দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলবে—তারাই রুয়েট ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবে।