শিক্ষক নিয়োগে উপাচার্যের ‘স্বেচ্ছাচারিতায়’ বাদ পড়েছেন যোগ্যরা
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) বিভিন্ন বিভাগে প্রশ্নবিদ্ধ ও সন্দেহজনক নিয়োগের মাধ্যমে যোগদান করছেন ১৬ জন প্রার্থী। গত মাসে সম্পন্ন হওয়া এ নিয়োগের সামগ্রিক প্রক্রিয়াকে অস্বচ্ছ ও বিশেষ প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন উচ্চশিক্ষালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানাভাবে হস্তক্ষেপ করেন এবং বেশ কিছু নতুন সংস্কৃতি চালু করেন—যা ইতঃপূর্বে দেশের কোনো উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখা যায়নি।
এর আগে গত মাসের ১৩ তারিখ মাভাবিপ্রবির বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি এবং পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরদিন ১৪ আগস্ট পরীক্ষা হয়েছে ফার্মেসি এবং অর্থনীতি বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষা। সবগুলো পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এছাড়াও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য না হয়েও পরীক্ষার হলে উপস্থিত থাকার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলামের বিরুদ্ধে। মাভাবিপ্রবির শিক্ষক সমিতির অভিযোগ, নিজের পছন্দের প্রার্থীদের সুবিধা দিতে ঢাকায় পরীক্ষা আয়োজন করেছেন উপাচার্য। তবে, উপাচার্যের পাল্টা অভিযোগ, শিক্ষকরা তাদের পছন্দে প্রার্থীদের মনোনীত করতে ঢাকায় পরীক্ষা আয়োজনের বিরোধিতা করেছেন।
এর আগে গত বছরের ২৫ মে প্রকাশিত শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মাভাবিপ্রবির বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে প্রভাষক পদে ৩ জন, পরিসংখ্যান বিভাগে ৫ জন, ফার্মেসি বিভাগে ৩ জন ও অর্থনীতি বিভাগে ৫ জন প্রভাষক পদের জন্য এই নিয়োগ হয়েছিল। যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন প্রায় ৪শতাধিক প্রার্থী। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, পরীক্ষার ধরন দেখে আমাদের মনে হয়েছে, কাকে নিয়োগ দেয়া হবে— তা আগে থেকেই নির্ধারিত। তাদের মতে, এমন প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ এবং পছন্দের প্রার্থীকে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ‘অতি আগ্রহ’ মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘শিক্ষকতার আগ্রহে’ অনুৎসাহ বাড়াবে।
এছাড়াও গড়িমসি করা হয়েছে ফলাফল প্রদানের ক্ষেত্রেও। শুরুতে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা অফিস থেকে পরীক্ষা গ্রহণের দিনই ফলাফল জানানো হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও শুধুমাত্র মনোনীতদের ডেকে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে গত মাসের ২০ তারিখ। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ঐদিন দুপুর ৩ টায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকা অফিস থেকে ফলাফল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তা করা হয়নি; তারা যাদের নিয়েছে, শুধু তাদেরই জানিয়েছে। আমরা পরবর্তীতে জানতে পেরেছি। অথচ ফলাফল দেবে বলে আমাদের রাত পর্যন্ত সেখানে অপেক্ষা করানো হয়েছিল। এরপর গত মাসের ২৯ তারিখ তা রিজেন্ট বোর্ড সভায় চূড়ান্ত নিয়োগের সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও অ্যাকাডেমিক পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে দুটি শূন্য পদের বিপরীতে চারজনকে শিক্ষক নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তা মো. ফরহাদ হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি এবং বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে দুজন শিক্ষকের চাহিদা থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই চার প্রার্থীকে নিয়োগ দেন উপাচার্য।
এদিকে চলতি নিয়োগে মনোনীতদের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সর্বোচ্চ ৭ জন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৩ জন, নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থাৎ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) ২ জন এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রয়েছে ১ জন করে প্রার্থী। অন্যদিকে নিয়োগ নিয়ে শিক্ষার্থীরা আইনি নোটিশ পাঠালেও তা গোপন রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে। এ সংক্রান্ত একটি কপি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে এসেছে।
মাভাবিপ্রবি থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অভিযোগ, চলতি নিয়োগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে মেধার অবমূল্যায়ন এবং নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেছেন জাবির সাবেক শিক্ষক ও মাভাবিপ্রবির বর্তমান এই উপাচার্য। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত, বিভাগ ও অনুষদে প্রথম হয়েও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারাও সন্দেহ জাগিয়েছে শিক্ষার্থীদের মনে। একই সাথে পরীক্ষা চলাকালীন বিশেষ শিক্ষার্থীদের (সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত) উপাচার্যের পরিদর্শনকালে পরিচিত করে দেওয়াও হতাশ করেছে শিক্ষার্থীদের।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি নিয়োগ পেয়েছেন এমন প্রার্থীদের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন নিজ বিভাগে ৬ষ্ঠ, ৮ম স্থান অধিকার করেছেন এমন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও শিক্ষা ধাপের বিভিন্ন স্তরেরও তাদের ফলাফল সন্তোষজনক নয়—যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে, তাদের তুলনায়।
মাভাবিপ্রবির বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন এর আগে ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ১৯৮৮ সালের ১৮ আগস্ট জাবির পরিসংখ্যান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট সহযোগী অধ্যাপক ও ১৯৯৯ সালের ১৮ আগস্টে অধ্যাপক হন তিনি।
এখানে ভালো ফলাফলধারীরা বাদ পড়েছেন। আমাদের যথেষ্ট অবকাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা পূর্ণ মাত্রায় থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা উদ্দেশ্যমূলক। এছাড়াও নিয়োগের ক্ষেত্রে এসব নেতিবাচক কারণে আগামীদিনে শিক্ষকতায় আগ্রহ হারাবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা—অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ।
এছাড়াও তিনি জাবির সিনেট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্য ও শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ফলে, চলতি নিয়োগে জাবি থেকে মোট ৭ জন প্রার্থীর নিয়োগ পাওয়াকে অনেকটাই সন্দেহের চোখে দেখছেন নিয়োগ প্রার্থীরা। তারা আর বলছেন, পরীক্ষার ধরন দেখে আমাদের মনে হয়েছে, কাকে নিয়োগ দেয়া হবে— তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা। পরীক্ষাটি ছিল একটি অভিনয় মাত্র।
এ নিয়ে মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. মাসুদার রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেটা যদি সার্বজনীন হতো, সেটাকে সাধুবাদ জানাতাম। কারণ তখন সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী সকল ক্ষেত্রে সমান সুযোগ পেত। একজন শিক্ষার্থী যখন ৬ বা ৭ বছর অ্যাকাডেমিক ক্যারিয়ারে প্রায় অর্ধ-শতাধিক শিক্ষকদের দ্বারা মূল্যায়িত হয়ে মেধা তালিকায় প্রথম দিকে অবস্থায় করে নেয়, তখন সে উক্ত বিভাগে শিক্ষকতা করার স্বপ্ন দেখা শুরু করে এবং দুই-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া আমাদের দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটিই হয়ে থাকে। এবারের নিয়োগে আমাদের নিজস্ব গ্র্যাজুয়েটরা প্রচলিত নিয়ম ও কাস্টম-এ যা হয়ে থাকে তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন—এ আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি। এর দায় শিক্ষক হিসেবে আমরাও এড়িয়ে যেতে পারি না।
আমাদের নিজস্ব পর্যাপ্ত অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার আয়োজন আমাদের মনে অনেক সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পরে দেখা গেল ১৬টি পদের বিপরীতে যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২ জন আমাদের নিজস্ব গ্র্যাজুয়েট নিয়োগ পেয়েছেন— যুক্ত করেন অধ্যাপক মো. মাসুদার রহমান।
আর বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য (পরে বোর্ড থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতিপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক বলেন, মাভাবিপ্রবির নিয়োগ পরীক্ষা বিদ্যমান নিজস্ব কাঠামোয় আয়োজনের যথেষ্ট সুবিধা ও পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও মাভাবিপ্রবির অবকাঠামোর বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন অযৌক্তিক ও নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য করা হয়েছে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক আর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অমর্যাদাকর এবং এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল। তিনি তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতেই এমনটা করেছিলেন।
চলতি নিয়োগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিয়ে মেধার অবমূল্যায়ন এবং নিজের ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করেছেন জাবির সাবেক এই শিক্ষক ও মাভাবিপ্রবির বর্তমান উপাচার্য। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত, বিভাগ ও অনুষদে প্রথম হয়েও লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারাও সন্দেহ জাগিয়েছে আমাদের মনে—পরীক্ষায় অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী।
মাভাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ জানিয়েছেন, আমরা শুরু থেকেই এ নিয়োগ নিয়ে সন্দেহের কথা জানিয়েছিলাম। নিয়োগের পর শিক্ষা জীবনে ভালো ফলাফলধারীরা প্রথমদিকে থাকলেও তাদের বাদ দেওয়ার ফলে আমাদের সন্দেহ পরোক্ষভাবে প্রমাণিত হচ্ছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। এছাড়াও একটি বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যখন নিয়োগ প্রাপ্ত অধিকাংশ শিক্ষার্থী থাকে—তখন তার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং যার কারণে আমরা এ নিয়োগের বিপক্ষে ছিলাম।
এখানে প্রথম দিককার শিক্ষার্থী বা ভালো ফলাফলধারীরা বাদ পড়েছেন। এছাড়াও আমাদের যথেষ্ট অবকাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা পূর্ণ মাত্রায় থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা উদ্দেশ্যমূলক। এছাড়াও নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ রকম নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে মেধাবীদের বাদ দিতে থাকে তাহলে আগামীদিনে শিক্ষকতায় আগ্রহ হারাবে মেধাবী শিক্ষার্থীরা—যুক্ত করেন এই শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা।
অন্যদিকে নিয়োগ পরীক্ষার দিন বোর্ডে থাকার কথা অস্বীকার করেছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাদেমুল ইসলাম। তিনি শুধু উপাচার্যের সাথে দেখা করেছেন এবং ২-৩ মিনিট থেকে কেন্দ্র থেকে চলে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে তিনি হলে উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা সরবরাহ ও পরীক্ষা তদারকি করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রে থাকা একাধিক শিক্ষার্থী। এছাড়াও পরীক্ষার হলে প্রার্থীদের (নিয়োগপ্রাপ্ত) উপাচার্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মাভাবিপ্রবির বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. জহিরুল ইসলাম।
মাভাবিপ্রবির বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নির্বাচনী পরীক্ষার আয়োজন অযৌক্তিক ও নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য করা হয়েছে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়ার এমন সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক আর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অমর্যাদাকর। উপাচার্য তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতেই এমনটা করেছিলেন। এর পেছনে ভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল—এখানে থাকাটা নৈতিকতাবিরোধী মনে হওয়ায় আমি বোর্ড থেকে সরে গিয়েছিলাম—অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ উমর ফারুক
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও অ্যাকাডেমিক পরিকল্পনা কমিটির সুপারিশ উপেক্ষা করে দুটি শূন্য পদের বিপরীতে চার শিক্ষক নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ কর্তা ড. মো. ফরহাদ হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি এবং বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে দুজন শিক্ষকের চাহিদা থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ওই চার প্রার্থীকে নিয়োগ দেন উপাচার্য। মাভাবিপ্রবির ২২৯তম রিজেন্ট বোর্ড সভার মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়ার পর বিষয়টি সবার নজরে আসে। এ নিয়ে সে সময় ক্ষোভও জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং নিয়োগ প্রার্থীরা।
এরপর এ নিয়ে উপাচার্য তখন জানিয়েছিলেন, আমরা কিছু যোগ্য প্রার্থী পেয়েছিলাম; তাই বাছাই বোর্ডের বহিরাগত শিক্ষকরা তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছিলেন। এছাড়া আমরা যে শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছিলাম তারা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে বেশি যোগ্য। তাই এখানে স্বজনপ্রীতি বা নিয়োগে অন্যান্য অনিয়ম ছিল না বলেও জানিয়েছিলেন উপাচার্য। তখন বিষয়টি নিয়ে বেশ সরব হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি।
বিষয়গুলো নিয়ে জানতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোনে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন।