নিজ কক্ষ থেকে রুয়েট কর্মকর্তাকে বের দিল ছাত্রলীগ, ঝুলছে তালা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজার নামাজের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে বিপাকে পড়েছেন মো. মিলনুর রশিদ। গতকাল সোমবার (২৮ আগস্ট) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার নিজ অফিস কক্ষ থেকে তাকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
মো. মিলনুর রশিদ রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার। এদিন বিকেল ৩টার দিকে রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধীন ফাউন্ড্রিশপ চেম্বার থেকে মিলনুরকে বের করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় সংগঠনটি।
বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের উদ্দেশ্যে নয়; বরং নিজের ফেসবুকে বিষয়টি রেখে দেওয়ার জন্য শেয়ার করা হয়েছে। কিন্তু এ পোস্টের কারণে ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে নিজ কক্ষ থেকে বের করে দিয়েছেন। -মিলনুর রশিদ
এ ঘটনায় যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. নীরেন্দ্র নাথ মুস্তফীকে সভাপতি করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন শহীদ শহীদুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আলী হোসেন এবং গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুফতি মাহমুদ রনি।
আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্তকার্য সম্পন্ন করে সুপারিশসহ মতামত দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জানাজায় মানুষের উপস্থিতির সঙ্গে সম্প্রতি সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতির তুলনা দেখিয়ে একটি কোলাজ ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন রুয়েটের কর্মকর্তা মিলনুর রশিদ।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু ও সাঈদীর জানাজার ছবি পোস্ট করে শাস্তির মুখে রুয়েট কর্মকর্তা
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর এ নেতার মৃত্যুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে তার জীবনকর্মসহ বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে গত ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হেয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো জানাজার ওই ছবিটি শেয়ার করেন মিলনুর রহমান।
রুয়েটের ওই কর্মকর্তার এমন জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার কক্ষে যান। এসময় মিলনুর রশিদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। -শাখা ছাত্রলীগ
চাইলে রুয়েট কর্মকর্তা মিলনুর রশিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের উদ্দেশ্যে নয়; বরং নিজের ফেসবুকে বিষয়টি রেখে দেওয়ার জন্য শেয়ার করা হয়েছে। কিন্তু এ পোস্টের কারণে ছাত্রলীগের নেতারা আমার কক্ষে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, রুয়েটের ওই কর্মকর্তার এমন জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার কক্ষে যান। এসময় মিলনুর রশিদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা তাকে কক্ষ থেকে বের দিয়ে সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেন।