পা পিছলে লেকে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর মৃত্যু
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) লেকের পানিতে ডুবে দুই ছাত্রী মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে সাড়ে ১২টার পর এ ঘটনা ঘটে। পরে তাদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ড. কাজী ইসমাইল হোসেন দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
মারা যাওয়া দুই ছাত্রীর নাম তাসপিয়া জাহান রিতু এবং অনন্যা হিয়া। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাদের মধ্যে রিতু খুলনার বড়বাড়িয়া এলাকার মনিরুজ্জামানের মেয়ে ও অনন্যা হিয়ার বাড়ি বাগেরহাটের ফকিরহাটে।
ছাত্রীদের উদ্ধারকারী এক শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, দুজন ছাত্রীর একজন পানিতে নেমে ডুবে যায়। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল তাই তেমন কেউ ছিল না বাইরে। আরেকজন বান্ধবী তাকে বাচাতে গিয়ে ডুবে গেছে। একজন মহিলা(সম্ভবত বশেমুরবিপ্রবি স্কুলের টিচার) আমাদের জানান, আমি দুজন মেয়েকে নামতে দেখেছি পুকুরে। এখন দেখতে পাচ্ছিনা। পরে দুই জোড়া জুতা লেকপারে দেখে আমাদের ও সন্দেহ হয়। পরে আমরা প্রায় ৫০ জনের মত লেকে নেমে ২০/৩০ মিনিট পর দুজনকে খুঁজে পাই এবং হাসপাতালে নিয়ে যাই।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে প্রথম দিকে কোনো শিক্ষক না থাকায় চিকিৎসক এবং স্টাফদের অত্যন্ত অবহেলা পেয়েছি। পরবর্তীতে শিক্ষক এবং প্রক্টর স্যার পৌঁছালে পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পর্যাপ্ত প্রাথমিক চিকিৎসা পাননি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এম্বুলেন্সে অক্সিজেন সুবিধাও ছিলনা। এর প্রতিবাদস্বরূপ শিক্ষার্থীরা দুপুর ৩.০০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালযের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার লিখন চন্দ্র বালা বলেন, তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। শিক্ষার্থীদের যখন উদ্ধার করা হয় তখন আমি সেখানে ছিলাম। আমি প্রাথমিক চিকিৎসা দেই এবং তাদের পালস চেক করে বুঝতে পারি তারা ক্লিনিকালি ডেথ। কিন্তু ইসিজি ছাড়া মৃত ঘোষণা করা যায় না। একারণে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এম্বুলেন্সে অক্সিজেন ছিল। কিন্তু যেহেতু তারা ক্লিনিকালি ডেথ ছিল এখানে অক্সিজেন প্রদানের বিষয় ছিল না।
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সঠিক নয়। দু’জন ছাত্রী ডুবে যাওয়ার প্রায় ৩০ মিনিট পর উদ্ধার করা হয় এবং তারা তখনই মৃত ছিল। একারণে অক্সিজেনের বিষয়ই ছিল না। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের পরিবারের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তরের ব্যবস্থা করছি।
এ বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাসপাতালে ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানান এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ করতে বলেন।