টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে গ্রেপ্তার ৩৪ শিক্ষার্থী কারাগারে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০৯:০০ PM , আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৩, ০৯:০০ PM
সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রেপ্তার ৩৪ শিক্ষার্থীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেলে আটকের পর আজ সোমবার বিকেলে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ফারহান সাদিকের আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে সুনামগঞ্জ পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক মো. বোরহান উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল রবিবার বিকেলে এই ৩৪ জনকে আটক করে তাহিরপুর থানা-পুলিশ। আজ দুপুরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে থানায় পুলিশ মামলা করে।
পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীরা ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তারা হাওরে বেড়ানোর বাহানায় এখানে গোপন বৈঠক ও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে এসেছিলেন। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত ও মানুষের জানমালের ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্য ছিল তাঁদের। গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বুয়েটের শিক্ষার্থী রয়েছেন ২৪ জন।
গ্রেপ্তার বুয়েটের শিক্ষার্থীরা হলেন মেটেরিয়ালস অ্যান্ড মেটালারজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪র্থ বর্ষের আফিফ আনোয়ার, মেকানিক্যাল বিভাগ ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বখতিয়ার নাফিস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের মো. সাইখ সাদিক, নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১ম বর্ষের ইসমাইল ইবনে আজাদ, সব্বির আহম্মেদ, নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২য় বর্ষের তাজিমুর রাফি, বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগে ৩য় বর্ষের মো. সাদ আদনান অপি, বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগে ১ম বর্ষের মো. শামীম আল রাজি, যন্ত্র কৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মো. আব্দুলাহ আল মুকিত, মাহমুদুর হাসান, যন্ত্র কৌশল বিভাগের ১ম বর্ষের মো. জায়িম সরকার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের হাইছাম বিন মাহবুব, আইপিই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের খালিদ আম্মার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মো. ফাহাদুল ইসলাম, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তানভির আরাফাত ফাহিম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এ টি এম আবরার মুহতাদী, মো. ফয়সাল হাবিব, আব্দুল বারি, বস্তু ও ধাতব কৌশল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের আনোয়ারুল্লাহ সিদ্দিকী।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা, এসব শিক্ষার্থী গতকাল সকাল সাতটার দিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় আসেন। সেখান থেকে একটি হাউসবোট নিয়ে তারা টাঙ্গুয়ার হাওরে যান। তারা হাউসবোট নিয়ে দিনভর হাওরে ঘোরেন। বিকেলে হাওরের উত্তর পাড়ে সীমান্তবর্তী টেকেরঘাট এলাকায় যাওয়ার পথে পুলিশ দুটি স্পিডবোটে গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। গতকাল বিকেল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত থানা-পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও এ বিষয়ে পুলিশ কোনো তথ্য জানায়নি।
আজ বিকেলে জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, আটক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করতে পুলিশের সময় লেগেছে। অভিযোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। যাতে কেউ সন্দেহ না করে এ জন্য তারা বেড়ানোর ছলে হাওরে এসেছেন। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন। আজ দুপুরে দায়ের করা মামলার বাদী হয়েছেন তাহিরপুর থানার উপপরিদর্শক মো. রাশেদুল কবির।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু সাঈদ বলেছেন, পুলিশ সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করেছে।