নিরাপত্তাহীনতায় শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাকর্মীরা
কর্তব্যরত অবস্থায় প্রায়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগত ব্যক্তি কর্তৃক মারধর, হাতাহাতি, কথা কাটাকাটি, গালি-গালাজ ও হুমকির শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীরা। পাশাপাশি মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েও প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাদের।
নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা-কর্মীদের মারধর ও হুমকির কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। এমনকি কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারধরের শিকার ও গুরুতর আহত হয়েছেন নিরাপত্তা-কর্মীদের অনেকেই। এর মধ্যে সর্বশেষ ১২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটকে বহিরাগত কর্তৃক এক নিরাপত্তা-কর্মীকে মারধর, ৫ ফেব্রুয়ারিতে একই জায়গায় সিএনজি সরাতে বললে কথা কাটাকাটির জেরে কয়েকজন চালক কর্তৃক ৩ নিরাপত্তাকর্মী মারধরের শিকার হন।
তারা জানান, গত বছরের ৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিলায় এক পুলিশ সদস্যকে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় মারধরের শিকার এবং গত বছরের ৩০ জুলাই নবনির্মিত এফইটি বিভাগের ওয়ার্কশপে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায় মাদকাসক্ত কর্তৃক মারধরে গুরুতর আহতসহ ছোট-বড় অসংখ্য ঘটনায় ভুক্তভোগী এসব নিরাপত্তাকর্মীরা।
নিরাপত্তা দপ্তর সূত্র বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও বেসরকারি যমুনা সিকিউরিটি কোম্পানির প্রায় ১২০ জন নিরাপত্তাকর্মী নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তবে এ দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) মো. রেজাউল করীম অবসরে গেলে এ দপ্তরের কোন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। বর্তমানে দপ্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শাহেদ আহমদ, সিনিয়র সুপারভাইজার (নিরাপত্তা) মো. ফারুক মিয়া ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তা সুপারভাইজারের দায়িত্ব থাকা বায়েজিদ আহমদ, তসলিম দেওয়ান ও বাদশা মিয়ার সহযোগিতায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা চলছে।
তবে নিরাপত্তা শাখার দায়িত্বে থাকা রেজাউল করীমের অবসরের পর এ দপ্তরের দায়িত্বে কেউ না থাকায় নানা জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ নিরাপত্তাকর্মীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরাপত্তাকর্মী জানান, আমরা এখানে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করি। আমাদের অনেকেই এ ধরণের ঘটনার শিকার হন কিন্তু আমরা আমাদের সমস্যা কাউকে জানাতে পারি না। অভিযোগ বা সমস্যা জানালে উল্টো আমাদেরকেই সতর্ক করা ও শাসানো হয়। মৌখিকভাবে নিরাপত্তা সুপারভাইজারদেরকে জানিয়েছি। কোন সমাধান পাইনি আমরা। এমনকি নিউজে নাম প্রকাশ করলে কিংবা অভিযোগ জানালে চাকরি চলে যেতে পারে বলেও উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেন এ নিরাপত্তাকর্মী।
এ বিষয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার বায়েজিদ আহমদ বলেন, কোন অভিযোগ বা সমস্যা আসলে আমরা তৎক্ষণাৎ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা বা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদেরকে মৌখিকভাবে জানাই; এর বাইরে আমি আর কিছু জানি না।
নিরাপত্তাকর্মীদের এসব সমস্যার নিয়ে জানতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমার বসের (রেজিস্ট্রার) অনুমতি ছাড়া কিছুই বলতে পারব না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ফজলুর রহমান, নিরাপত্তাকর্মীদের উপর হামলার বিষয়ে কোন ধরণের লিখিত অভিযোগ পাইনি বলে জানিয়েছেন।