১৮ মে ২০২৩, ১৪:০৫

যবিপ্রবিতে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

যবিপ্রবিতে বিষাক্ত পার্থেনিয়াম  © টিডিসি ফটো

বিষাক্ত পার্থেনিয়ামে ছেঁয়ে গেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(যবিপ্রবি) ক্যাম্পাস। সবুজ ঝোপ আকৃতির সাদা ফুলবিশিষ্ট গাছগুলো দূর থেকে দেখতে সাধারণ কোনো আগাছা মনে হলেও এটি মূলত নর্থ-আমেরিকান প্রজাতির একটি বিষাক্ত আগাছা। এটি পৃথিবীতে ১০০টি আগ্রাসি প্রজাতির গাছের মধ্যে অন্যতম। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলের জন্য হতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ।

ক্যাম্পাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তার ধারে, শিক্ষক ডরমিটরি, শিক্ষার্থী হল, খেলার মাঠসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে ভয়ংকর এই আগাছা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তবে মেডিকেল সেন্টার সংলগ্ন কড়ুইতলা,শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের সম্মুখ ঝোপ, তারামন বিবি হল সড়ক, শহীদ মিনার চত্বর থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবন সড়ক, ফিশারিজ হ্যাচারী সংলগ্ন এলাকায় এর বংশবিস্তার বেশি।

আগাছাটির বৈজ্ঞানিক নাম পার্থেনিয়াম হিস্টিরিওফোরাস। জানা যায়, বিষাক্ত এ আগাছাটি ভুট্টা ও গম বীজের সঙ্গে বাংলাদেশে এসেছে। এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে যাওয়ার কারণে সব ঋতুতে বিস্তার হচ্ছে। অঞ্চলভেদে এটি কংগ্রেস ঘাস, গাজর ঘাস, চেতক চাঁদনী ইত্যাদি নামে পরিচিত। ফুলগুলি সাদা ও ক্ষুদ্রকার। চার মাসের মধ্যে জীবনচক্র সম্পূর্ণ করে। একটি গাছ থেকে ৪-৫ হাজার গাছ জন্মাতে পারে। এটাই পার্থেনিয়ামের দ্রুত বংশবৃদ্ধির কারণ। বীজ হালকা ও প্যারাসুটের মতো হওয়ার কারণে তা দ্রুতগতিতেই ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত রাস্তার আশপাশে এরা বেশি জন্মায়।

আরও পড়ুন: পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য যবিপ্রবি ছাত্রলীগের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ 

এ বিষয়ে যবিপ্রবির ফার্মেসি বিভাগের প্রফেসর ড. কিশোর মজুমদার বলেন, আগাছাটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে ছোট ছোট নরম ফুল হয় যা সহজে বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরাগরেণু মানবদেহের নাক ও মুখের মাধ্যমে শ্বাসতন্ত্রে চলে যেতে পারে এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে। ফলে এলার্জি, ঘনঘন জ্বর, অসহ্য মাথাব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, হাপানির মতো মারাত্মক সব রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ক্ষতিকর দিকের পাশাপাশি এর কিছু উপকারী দিকও রয়েছে যেমন- ডিসেন্ট্রি, ডায়রিয়া, বাত ব্যথা ও ম্যালেরিয়া ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা করা যায়। যেহেতু এটি বায়ুবাহিত, তাই এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। 

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগাছাটিকে তারা ছোট ফুলগাছ ভেবে এসেছে। অনেকে হাতে ফুল নিয়ে ছবি তুলেছেন এবং ঘরেও নিয়ে গিয়েছেন। সম্প্রতি এলার্জি জাতীয় শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কমিটির প্রধান ড. মৌমিতা চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। যেহেতু আগাছটি ক্ষতিকারক,সুতরাং এটি যদি ক্যাম্পাসে থেকে থাকে তাহলে আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।