র্যাগিংয়ের দায়ে শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের ১৬ জন বহিষ্কার
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ে জড়িত থাকার দায়ে হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারে পড়েন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। র্যাগিংয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২২ মার্চ) রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মো. কামরুজ্জামান বলেন, র্যাগিংয়ের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ওই শিক্ষার্থীদের এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের হলে ঢোকার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে একই ঘটনা ঘটালে তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, বুধবার বেলা তিনটায় সিন্ডিকেটের বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সভায় ১৬ শিক্ষার্থীকে হল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়। তাঁদের মধ্যে সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এই পাঁচজন হলেন মো. আপন মিয়া, মো. আল আমিন, মো. পাপন মিয়া, মো. রিয়াজ হোসেন ও মো. আশিক হোসেন। বহিষ্কৃত হওয়া অন্যদের নাম রাত ১২টা পর্যন্ত জানা যায়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, যে পাঁচজন বহিষ্কৃত হওয়ার তথ্য জানা গেছে, তাঁরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তবে তাঁদের দলীয় পদ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতারাও স্বীকার করেছেন বহিষ্কৃতদের মধ্যে তিনজন তাঁদের কর্মী। আরও যাঁরা এ ঘটনায় জড়িত, তাঁদের মধ্যে অন্য ছাত্রসংগঠনের কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থী আছেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের টাকা ধার নিয়ে ১৪ মাসেও দিচ্ছেন না চবি ভিসির মেয়ে
উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে র্যাগ দিয়েছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। পরে র্যাগের শিকার শিক্ষার্থীদের একজন ভয়–আতঙ্কে বাড়িতে চলে যান। বাড়ি থেকে বিষয়টি মুঠোফোনে খুদে বার্তায় বিভাগের প্রধানকে অবহিত করেন তিনি। ওই ঘটনাকে জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত হিসেবেও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন।
প্রথম দিকে শুধু এক শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেওয়ার বিষয় আলোচিত হলেও পরে জানা যায়, একই বিভাগের ১০ জনের মতো নবীন শিক্ষার্থীকে পরিচয় পর্বের নামে ডেকে নিয়ে র্যাগ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়ে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে তদন্ত কমিটি ঘটনার সঙ্গে ১৬ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে।