খেলাকে কেন্দ্র করে শাবিপ্রবিতে আবারও মারামারি, প্রক্টরকে হেনস্থা
এবার ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি- ধস্তাধস্তিতে জড়িয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ফিল্ডে চলমান আন্তঃবিভাগীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিনাল ম্যাচের ফলাফল নিশ্চিত হওয়ার পর পরিসংখ্যান ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকেও হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত আন্তঃবিভাগীয় ফুটবল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিনালে মুখোমুখি হয় পরিসংখ্যান ও লোকপ্রশাসন বিভাগ। ৬০মিনিটের মূল খেলায় গোলশূণ্য ড্র হলে ফলাফল নির্ধারণের জন্য ট্রাইবেকারে ম্যাচ গড়ায়। এতে পরিসংখ্যান ৩টি গোল করলেও লোকপ্রশাসন স্কোর করতে ব্যর্থ হয় লোকপ্রশাসন। লোকপ্রশাসনের হয়ে সুজাত আহমেদ সর্বশেষ শুটের পর বিজয় উদযাপনের সময় পরিসংখ্যান টিমের মাঝখানে পরে যান তিনি। এসময় তাদের মধ্যে ঝামেল হয় এবং শেষ পর্যন্ত দুই দলের সমর্থক গোষ্ঠী এতে জড়িয়ে পড়েলে পরে হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও হাতাহাতির এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে লোকপ্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থী দ্বারা হেনস্থা ও আঘাতের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী।
এবিষয়ে প্রক্টর বলেন, একটা ছেলে বাঁশ নিয়ে দৌঁড়াচ্ছিল; সেখানে তারা দুইয়েকজন ছিল। আমি বাঁশটা নিতে যাচ্ছিলাম, তারা দিতে চাচ্ছিলো না। এটা নিয়ে কাড়াকাড়ি হচ্ছিল। আঘাতের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, আঘাতটা আমি ঐরকম দেখি নাই। আমাকে পিছন থেকে ধাক্কা মারছে একজন। কে বা কারা এমনটি করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জানি না এরা কারা। হয়তোবা তদন্ত কমিটি তদন্ত করলে পাবে। তাদের পূর্ববর্তী যে রেকর্ড তাও আমি জানি না।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে তুচ্ছ ঘটনায় মারামারি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। লাগাতার ঘটমান এমন ঘটনা সুষ্ঠু বিচারে নিষ্পত্তি না হওয়ায় প্রতিনিয়ত এমন ঝামেলা ঘটে চলছে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই। তবে এমন প্রত্যেকটি ঘটনায় বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন প্রক্টর মো. কামরম্নজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেন, অবশ্যই আমি মনে করি প্রত্যেকটা ঘটনায় বিচার হওয়া উচিত। তাহলে এ অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা যাবে এবং সেটা জরুরি। সিনিয়র জুনিয়র সম্মানের যে বিষয়টা এ জায়গা থেকে যদি তৈরি না হয় তাহলে আর কোথায় তৈরি হবে।
এবিষয়ে খেলাধুলা উপকমিটির সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, ফিজিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টর আমাকে জানিয়েছেন খেলা খুব সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়ে গেছে। তারপর যেটা ঘটেছে সেটা হলো দুই দলের সমর্থক যারা তাদের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশনের স্টুডেন্টরাই বেশি ঝামেলা করেছে, তবে তারা খেলোয়ার না। প্রক্টরকে আঘাত করার বিষয়ে তিনি বলেন, ফিজিক্যাল এডুকেশনের ডিরেক্টর প্রক্টর স্যারের গায়ে কেউ হাত তুলেছে বা ধাক্কা দিয়েছে এমন কোনো কথার অবতারণা করেন নি। এ ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই এটা কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তাদের হওয়া উচিত এবং প্রশাসনিক একটা ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
এদিকে মারামারি ও ধস্তাধস্তির ঘটনায় পরিসংখ্যান বিভাগের ২জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া শেষে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।