আবরার ফাহাদের নামে জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের নামে কুষ্টিয়ায় তার নিজ গ্রামে মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ার পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্য কুরআন শিক্ষা দেয়া হয় এই মসজিদে।
শুক্রবার (৩ মার্চ) শহীদ আবারর ফাহাদ ফাউন্ডেশনের এক ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে, সকল প্রস্তুতি শেষে আজকে “শহীদ আবরার ফাহাদ জামে মসজিদ” এর কাজের শুভ উদ্বোধন করা হইলো। সকলের সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞত।
আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী। তার বাবা মো. বরকত উল্লাহ বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মা রোকেয়া খাতুন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং কুষ্টিয়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন আবরার। পরে নটর ডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন। ২০১৮ সালে তিনি বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে (১৭তম ব্যাচ) ভর্তি হন। শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন আবরার।
আবরার ফাহাদ যখন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন, তখন পরিবারটিতে নতুন আশার সঞ্চার জেগেছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে সব আশা-আকাঙ্খা শেষ হয়ে গেছে। ওই রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। সারা দেশের মানুষকে নাড়া দিয়েছিল এ ঘটনা।
এর আগে গত ২০১৯ সালের ৫ অক্টোবর বিকালে ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এর জেরে পর দিন রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। পরে তার লাশ সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়।
আরও পড়ুন: ‘হ্যাপি বার্থডে ভাইয়া, আল্লাহ তোকে জান্নাত দান করুক’
নৃশংস এই হত্যা মামলায় ২৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ। এর পর চার্জশিটভুক্ত ২৫ আসামিসহ মোট ২৬ ছাত্রকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। দেশব্যপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ করা হয় ছাত্র রাজনীতিও।
আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।